প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়েও শান্তনু চাকরি করে দেননি বলে তৃণমূল নেতার অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে টাকা দেওয়ার অভিযোগে নাম উঠে এসেছে হুগলির তৃণমূল নেতা গুণধর খাঁড়ার। বৃহস্পতিবার ইডি দফতরে গুণধরকে তলব করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। ইডি জানিয়েছে, আরামবাগের পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি গুণধর। ইডির দাবি, হুগলির এই তৃণমূল নেতার কাছ থেকে চাকরি বিক্রি করতে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা নেন শান্তনু। ২৬ জন প্রার্থীর জন্য গুণধর ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা শান্তনুকে দিয়েছিলেন বলে ইডির তদন্তে উঠে এসেছে। চলতি সপ্তাহেই ইডির মুখোমুখি হয়েছেন গুণধর। বৃহস্পতিবার নথি নিয়ে ইডি দফতরে আবার তাঁকে তলব করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়েও শান্তনু চাকরি করে দেননি বলে গুণধরের অভিযোগ। শান্তনু গ্রেফতার হওয়ার আগে থেকেই নাকি গুণধরের দেওয়া তালিকায় অনেকের চাকরি না হওয়ার বিষয়ে শান্তনুর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন গুণধর। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ গুণধরের। যদিও শান্তনু টাকা নেওয়ার ব্যাপার অস্বীকার করেছেন এবং তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বলে ইডি সূত্রে খবর।
ইডির দাবি, প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারিতে চাকরির জন্য গুণধর শান্তনুকে টাকা দিয়েছিলেন বলে বয়ানে উঠে এসেছে। দু’টি ক্ষেত্রে চাকরির দর ছিল ভিন্ন। স্কুলে চাকরির জন্য কখনও ১০ লক্ষ টাকা কখনও বা তার থেকে বেশি দাম চাওয়া হয়েছিল বলে দাবি। গুণধর প্রাইমারিতে চাকরির জন্য ৭ জন এবং আপার প্রাইমারিতে ১৯ জন প্রার্থীর জন্য শান্তনুকে টাকা দিয়েছিলেন বলে ইডি সূত্রে খবর। একটি সূত্রের দাবি, গুণধর তাঁর আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের চাকরির জন্য শান্তনুকে টাকা দিয়েছিলেন।
পরে কলকাতা হাই কোর্ট ২৬৯ জনের নিয়োগ বাতিলের যে নির্দেশ দেন তাতে গুণধরের দুই মেয়ের নাম রয়েছে বলেও শোনা যায়। জানুয়ারি মাসে হুগলির বলাগড়ে শান্তনুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৩০০ জনের তালিকা উদ্ধার করে ইডি। যার মধ্যে বেশ কয়েক জনের চাকরি হয়েছে বলেও ইডির দাবি। এ বার ওই তালিকা ছাড়া আরও ২৬ জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ শান্তনুর বিরুদ্ধে। যদিও আদালতে শান্তনুর আইনজীবী টাকা নেওয়ার প্রমাণ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
গত ১০ মার্চ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন হুগলির প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতা (অধুনা দল থেকে বহিষ্কৃত) শান্তনু। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের কর্মী শান্তনু কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক বলে দাবি করে ইডি। ইডির অভিযোগ, সরকারি চাকরি বিক্রি করেই এত টাকা আয় করছেন শান্তনু। ধৃত শান্তনুর পিছনে কে বা কারা ছিলেন, চাকরি বিক্রি করার টাকা শান্তনুর কাছ থেকে কী ভাবে আসত, তা খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে ইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy