Advertisement
০২ মে ২০২৪
Madhyamik

মাধ্যমিকে খাতা দেখার সময় বাড়ানোর আর্জি

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, গত বছর উত্তরপত্র দেখার সময়সীমা ছিল ২২ থেকে ২৩ দিন। এ বছর সেটা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৯ দিন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৫:২৬
Share: Save:

বছর তিনেক ধরে মাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময়সীমা ক্রমেই কমে চলেছে। অথচ নতুন নতুন নিয়মের দরুন খাতা দেখার ঝক্কি বেড়েই চলেছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা। এই অবস্থায় উত্তরপত্র দেখার সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং শিক্ষা দফতরকে চিঠি লিখেছেন পরীক্ষকদের একাংশ। সেই সঙ্গে বানান ভুল করলে নম্বর কাটা চলবে না বলে নতুন যে-নির্দেশ এসেছে, তা রদ করতে বলা হয়েছে।

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, গত বছর উত্তরপত্র দেখার সময়সীমা ছিল ২২ থেকে ২৩ দিন। ২০১৮ সালে তা ছিল প্রায় এক মাস। এ বছর সেটা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৯ দিন। কিন্তু শিক্ষক-পিছু উত্তরপত্রের সংখ্যা কমেনি। গড়ে ১৫০টি করে উত্তরপত্র দেখতে হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষকদের। সেই সঙ্গে তাঁরা জানাচ্ছেন, এ বছর খাতা দেখার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুন নিয়ম যুক্ত হয়েছে। সেই নিয়ম মেনে প্রতিটি উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য এ বার সময় লাগছে অনেক বেশি। গত শনিবার থেকে উত্তরপত্র পেতে শুরু করেছেন পরীক্ষকেরা।

নতুন নিয়ম কী এবং তা মেনে খাতা দেখতে সময়ই বা বেশি লাগছে কেন? পরীক্ষকেরা জানাচ্ছেন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নতুন নিয়ম অনুযায়ী কোনও প্রশ্নের উত্তর দেখে যদি পুরো নম্বর দেওয়ার উপযুক্ত মনে না-হয়, সে-ক্ষেত্রে সেই কারণটি উত্তরপত্রেই উল্লেখ করতে হবে। পরীক্ষকদের বক্তব্য, কেন কম নম্বর দেওয়া হল, তার কারণ লিখতে সময় লাগছে। সেই সঙ্গে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের ক্ষেত্রে খাতায় নম্বর দেওয়ার জন্য বক্স এঁকে নিতে হচ্ছে পরীক্ষকদেরই। প্রতিটি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের ক্ষেত্রে বক্স তৈরি করে আলাদা আলাদা নম্বর বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠনের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘পুরোটাই সময়সাপেক্ষ। ছোট ছোট প্রশ্নের উত্তরের শেষে বক্স তৈরি নম্বর দিতে গিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক পরীক্ষার্থীর খাতায় প্রশ্নের উত্তরের শেষে বক্স আঁকার জায়গা মিলছে না।’’ সব মিলিয়ে একটি খাতা ঠিক ভাবে দেখতে প্রায় ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

১৫০টি খাতা দেখার জন্য ১৯ দিন সময় কি যথেষ্ট নয়? শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের অন্য একটি সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর মতে, ‘‘খাতায়-কলমে এই হিসেবের সঙ্গে বাস্তব চিত্র মেলে না। সারা দিন স্কুলে পড়ানোর পরে রাতে বাড়িতে বসে খাতা দেখতে হয়। কোনও কোনও পরীক্ষককে মাধ্যমিকের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকেরও উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করতে হয়। দেখতে হয় একাদশ শ্রেণির খাতাও। ফলে একসঙ্গে অনেক খাতা জমে যায়।’’ কিঙ্করবাবু জানান, সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদনের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে দাবি জানানো হয়েছে, বানান ভুলের জন্য নম্বর না-কাটার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হোক।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘খাতা দেওয়ার আগে পরীক্ষকদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে কোনও পরীক্ষক উত্তরপত্র মূল্যায়নের সমসয়ীমা নিয়ে কোনও রকম অসন্তোষ প্রকাশ করেননি।’’

যদিও এক পরীক্ষক বলেন, ‘‘পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক হয় প্রধান শিক্ষকদের। সেখানে শুধু উত্তরপত্র কী ভাবে দেখা হবে, সেই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনাই করেনি পর্ষদ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik Answer Paper Madhyamik Result
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE