রামপুরহাট মেডিক্যালে মাফুজা খাতুন এবং খগেন মুর্মু। —নিজস্ব চিত্র।
দুই আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রামেরই ছয় নাবালককে ধরেছিল পুলিশ। কিন্তু পুলিশে অভিযোগ করার ‘অপরাধে’ রামপুরহাটের নারায়ণপুর পঞ্চায়েত এলাকার ওই গ্রামে দুই নির্যাতিতার পরিবারকেই একঘরে করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। পুলিশের আশ্বাস, ওই দুই পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হবে।
মঙ্গলবার রামপুরহাট মেডিক্যালে বিজেপি প্রতিনিধি দলের সামনে এই অভিযোগে সরব হন ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ওই আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের দুই নির্যাতিতা কিশোরীর পরিবার। তাদের দাবি, থানা-পুলিশ করার জন্য গ্রামের কয়েক জন তাঁদের কল থেকে পানীয় জল নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কথায়, ‘‘আমাদের মেয়েদের এত বড় সর্বনাশ করেছে। তার পরে গ্রামছাড়া করে দেওয়া থেকে গ্রামে একঘরে করে দেওয়ার হুমকি শুনতে হচ্ছে!’’
এ দিন ওই অভিযোগ শুনে বিজেপির রাজ্য মহিলা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কথা বলবেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং তৃণমূলের রামপুরহাট ১ ব্লক কমিটির সদস্য সুরেন্দ্র টুডু বলেন, ‘‘এমন হুমকি যদি কেউ দিয়ে থাকে, তাহলে সে অন্যায় করেছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।’’ নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের সুখেন্দু পাল বলেন, ‘‘ওই সংসদের পঞ্চায়েতের সদস্যকে ওই ধরনের কোনও সমস্যা যাতে না ঘটে তা গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলব।’’
পুলিশ ও গ্রাম সূত্রে খবর, শনিবার রাতে ওই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সাত জনের মধ্যে গ্রামের ছ’জন ছাড়াও লাগোয়া ঝাড়খণ্ড থেকে ওই গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আসা আর এক নাবালক ছিল। সে পলাতক। রবিবার সকালে জানাজানি হওয়ার পরে গ্রামের কিছু লোকজন গ্রামের মাঝি হারামের কাছে ঘটনার ফয়সালা করতে চেয়েছিলেন বলে দুই নির্যাতিতার পরিবারের দাবি। মাঝি হারাম বাঁদনা পরবের পরে ফয়সালা করার জন্য সময় চেয়েছিলেন। দুই কিশোরীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখে চিকিৎসার জন্য পরিজনেরা তাদের রামপুরহাট মেডিক্যালে নিয়ে আসেন।
হাসপাতাল থেকে দুই পরিবারকেই ঘটনার কথা পুলিশে জানাতে বলা হয়। অভিযোগ হওয়ার পরেই পুলিশ গভীর রাত পর্যন্ত গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তদের ধরে। গণধর্ষণের মামলা-সহ পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সোমবার জুভেনাইল আদালত অভিযুক্ত ৬ জনকে বহরমপুরের একটি হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy