ফুলে গন্ধ নেই!
ভাবতেই পারেন না বিধায়ক তাপস রায়। তা-ও যে সে ফুল নয়, রজনীগন্ধা।
কবি কবেই বলেছেন, ‘রজনীগন্ধা বাস বিলালো, সজনী সন্ধ্যা আসবি না লো!’
সেই রজনীগন্ধার গন্ধহীনতায় রীতিমতো ব্যথিত তাপসবাবু। বিধানসভার মাঠে শীতকালীন পুষ্প প্রদর্শনীর তোড়জোড় চলছে এখন। তারই ফাঁকে বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশনে সরকার পক্ষের উপ মুখ্যসচেতক তাপসবাবু উদ্যান পালন মন্ত্রীকে প্রশ্নই করে বসলেন— চাষ করে এ রকম গন্ধহীন ফুল হচ্ছে কেন? উত্তরে রেজ্জাক মোল্লা রীতিমতো দার্শনিক। বললেন, ‘‘এটা মৌমাছিরা বলতে পারবে, আমি নয়।’’
সভাকক্ষের ওই মৌমাছির গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ল বিধানসভার বাইরেও। যা শুনে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মৌমাছিদের তো এখন দাঁড়ানোরই সময় নেই! তারা ছুটছে কালোকে ফর্সা করতে!’’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘ফুল নিয়ে তৃণমূলের চিন্তাই স্বাভাবিক। তবে উদ্যানপালন মন্ত্রী তো মৌয়ের লোভেই মৌচাকে গিয়েছেন! উত্তরটা তাঁর জানা উচিত!’’
শুধু গন্ধ নয়, রাজ্যের বিখ্যাত ফুলবাজারগুলির উন্নয়নের দায়ও এ দিন এড়িয়ে গিয়েছেন রেজ্জাক। গাঁদা, গোলাপ-সহ নানা ফুলের চাষ হয় রাজ্যে। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট ও দেউলিয়া এবং হাওড়ার মল্লিকঘাটেই সেই সব ফুলের প্রধান বাজার। সিপিএম বিধায়ক শেখ ইব্রাহিম আলির প্রশ্ন ছিল, কোলাঘাট ও দেউলিয়ায় ফুল সংরক্ষণ কেন্দ্র চালুর পরিকল্পনা আছে কি না। রেজ্জাক জানান, ওই ফুলবাজারের জমির কিছুটা রেল এবং বাকিটা ব্যক্তি মালিকানাধীন। তাই কোনও পরিকল্পনা নেই।
মল্লিকঘাট ফুলবাজার নিয়ে মন্ত্রীর পরিকল্পনা জানতে চেয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। তাতেও রেজ্জাকের জবাব, ওই বাজারের জমি পোর্ট ট্রাস্টের। বিক্রেতাদের মাথাপিছু ৭ টাকা করে নেয় তারা। পোর্ট ট্রাস্টের কাছে ৮ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে বাজার সমিতির। তাই ওই বাজার নিয়ে পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না। যদিও প্রাক্তন সাংসদ সুধাংশু শীলের দাবি, ‘‘পোর্ট ট্রাস্ট ওই জমি এক টাকায় ৯৯ বছরের লিজে রাজ্যকে দিয়েছে ২০০৮ সালে।
পোর্ট ট্রাস্ট এখন আর ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা নেয় না। বাজার সমিতি নেয়। তা দিয়ে ৬০ লক্ষ টাকার তহবিলও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই ক’বছরে সেই টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে!’’
এ দিন মন্ত্রী আরও জানান, ২০১৫-১৬ সালে বিদেশের বাজারে সরকারি ভাবে গ্ল্যাডিওলাস, মোরগঝুঁটি, রজনীগন্ধা ফুল রফতানি হয়েছে। কিন্তু এতে কত বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে, জানাতে পারেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy