Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Indian Railways

কুয়াশাদমন যন্ত্র কার্যত অকেজো, দেরি ট্রেনের

রেল সূত্রের খবর, উত্তর-মধ্য রেলের প্রয়াগরাজ ডিভিশনে ৮৫০, ঝাঁসি বিভাগে ৫৫০ এবং আগরা বিভাগে ৩৭০টিরও বেশি কুয়াশাদমন যন্ত্র বসানো হয়েছে।

উত্তর ভারতের হাড়কাঁপানো শীতে গাঢ় কুয়াশার মধ্যেও ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে বছর দুয়েক আগে ওই যন্ত্র চালু করেছিল রেল।

উত্তর ভারতের হাড়কাঁপানো শীতে গাঢ় কুয়াশার মধ্যেও ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে বছর দুয়েক আগে ওই যন্ত্র চালু করেছিল রেল। ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩০
Share: Save:

নাম তার ‘ফগ-সেফ’ বা কুয়াশাদমন যন্ত্র। ইঞ্জিনে বসে কুয়াশার দাপট উপেক্ষা করে ট্রেনকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করাই তার কাজ। কিন্তু রেলের অভিজ্ঞতা, সেই যন্ত্রকে দিয়ে ওই কাজ এ বার বিশেষ হচ্ছে না। কুয়াশার দৌরাত্ম্যে দেরির রোগ ফিরেছে ট্রেনে।

উত্তর ভারতের হাড়কাঁপানো শীতে গাঢ় কুয়াশার মধ্যেও ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে বছর দুয়েক আগে ওই যন্ত্র চালু করেছিল রেল। উত্তর-মধ্য রেলে বিভিন্ন ট্রেনের লোকোমোটিভ ইঞ্জিনে দেড় হাজারের বেশি জিপিএস-নির্ভর কুয়াশাদমন যন্ত্র বসানো হয়েছিল। যন্ত্রের ভরসায় ট্রেনের গড় গতি বাড়ানোর কথাও জানিয়েছিল রেল। কিন্তু প্রবল ঠান্ডায় কুয়াশার দাপট বাড়তেই দৃশ্যমানতা হ্রাসের সমস্যা এমনই তীব্র আকার ধারণ করেছে যে, ট্রেন ফের চলছে দেরিতে। অভিযোগ, রাজধানী, দুরন্ত থেকে কালকা এক্সপ্রেসের মতো দূরের বহু ট্রেন দেরির গেরোয় পড়ছে। প্রায় সব ট্রেনই চলছে পাঁচ-ছ’ঘণ্টা দেরিতে।

রেল সূত্রের খবর, উত্তর-মধ্য রেলের প্রয়াগরাজ ডিভিশনে ৮৫০, ঝাঁসি বিভাগে ৫৫০ এবং আগরা বিভাগে ৩৭০টিরও বেশি কুয়াশাদমন যন্ত্র বসানো হয়েছে। ওই প্রযুক্তিতে কুয়াশাচ্ছন্ন পথে ট্রেনের পরবর্তী সিগন্যাল পোস্ট কত দূরে রয়েছে, তার আভাস চালককে স্বয়ংক্রিয় উপায়ে জানিয়ে দেয় জিপিএস-নির্ভর ওই যন্ত্র। সিগন্যাল পোস্ট আসার আগেই চালক যাতে সতর্ক হয়ে তার রং দেখে ট্রেনের গতি কমাতে বা ট্রেন থামানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সেই জন্যই এই উদ্যোগ।

রেল জানিয়েছে, তীব্র ঠান্ডায় এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের দূষণের কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাতের দৃশ্যমানতা ৫০ থেকে ১০০ মিটারে এসে ঠেকছে। এই অবস্থায় সিগন্যাল নির্ভুল ভাবে বোঝার জন্য চালকদের প্রায়ই ট্রেনের গতি মন্থর করে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকছে না।

কুয়াশাদমন যন্ত্রের সাহায্যে পরবর্তী সিগন্যালের দূরত্ব জানা গেলেও ওই সিগন্যালের রং লাল, হলুদ না সবুজ— যন্ত্র সেটা জানাতে পারে না। ফলে সিগন্যালের দূরত্ব সম্পর্কে আভাস মিললেও তার রং দেখার জন্য নিজের দৃষ্টির উপরেই ভরসা করতে হয় ট্রেনচালককে। তাই দৃশ্যমানতা ৫০ মিটার বা তার থেকে নীচে নেমে গেলে তখন বাস্তবে ওই যন্ত্রের কোনও কার্যকারিতা থাকছে না। কুয়াশার দাপট কমলে সিগন্যালের দূরত্ব সম্পর্কে আগাম হদিস পেয়ে ট্রেনের গতি কিছুটা বাড়ানো সম্ভব হয়।

রেল অফিসারদের একাংশের বক্তব্য, কুয়াশায় ট্রেনের অস্বাভাবিক দেরির জেরে বিভিন্ন ডিভিশন সময়মতো রেক ফেরত পাচ্ছে না। চালক ও গার্ডের সংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। ট্রেন সময়মতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও করা যাচ্ছে না। ট্র্যাক খালি রেখে সমস্যা কমাতে সব জ়োনেই তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও দেরির অসুখ থেকে মুক্তি মিলছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways fog trains
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE