Advertisement
১৯ মে ২০২৪

প্রাণী পালনে প্রাণিমিত্রা নিয়োগ

গরিব মানুষের আর্থিক অবস্থা ফেরানোর জন্য আগেই প্রাণী পালনে জোর দিয়েছিল রােজ্যর সরকার। নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাণী-বন্ধু। সেই প্রকল্পের পাশাপাশি এ বার প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন করে প্রাণিমিত্রা নিয়োগের জন্য জুন মাসেই সাক্ষাৎকার নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে প্রশাসন। মাস তিনেক আগে এ জন্য শুধুমাত্র মহিলাদের আবেদনপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল। প্রাণিমিত্রা নির্বাচনের পর তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

সুমন ঘোষ
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৫ ০১:১৭
Share: Save:

গরিব মানুষের আর্থিক অবস্থা ফেরানোর জন্য আগেই প্রাণী পালনে জোর দিয়েছিল রােজ্যর সরকার। নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাণী-বন্ধু। সেই প্রকল্পের পাশাপাশি এ বার প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন করে প্রাণিমিত্রা নিয়োগের জন্য জুন মাসেই সাক্ষাৎকার নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে প্রশাসন। মাস তিনেক আগে এ জন্য শুধুমাত্র মহিলাদের আবেদনপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল। প্রাণিমিত্রা নির্বাচনের পর তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণে বিভিন্ন পশু-পাখির নানা রোগের লক্ষণ, রোগের প্রতিকার পদ্ধতি, ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম শেখানো হবে তাদের। তবে প্রাণিমিত্রাদের কোনও ভাতা বা বেতন দেওয়া হবে না। গরিবদের আর্থিক মানোন্নয়নে প্রাণিমিত্রা নিয়োগ করা হলেও সেই লক্ষ্য কতটা পূরণ হবে?

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ২ জন করে হিসেবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২৯০টি পঞ্চায়েতে মোট ৫৮০ জন প্রাণিমিত্রাকে নিয়োগ করা হবে। আবেদন করেছেন ১৮০৪ জন। তাঁদের মধ্যে থেকে ৫৮০ জনকে বাছাই করা হবে। আগামী ২৩ জুন থেকে শুরু হবে সাক্ষাৎকার নেওয়ার কাজ। ২৩ জুন ঘাটাল মহকুমার ৫টি ব্লকে সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। ২৪, ২৬ জুন ও ৭, ৮ জুলাই—এই চার দিন ইন্টারভিউ নেওয়া হবে খড়্গপুর মহকুমার ১০টি ব্লকের। ৩০ জুন ও ১ জুলাই ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি ব্লকের এবং ২ ও ৯ জুলাই মেদিনীপুর সদর মহকুমার ৬টি ব্লকের আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। জেলা পরিষদের মত্‌স্য ও প্রাণী পালন স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সূর্য অট্ট বলেন, “বাছাই করার পরেই দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।”

মাধ্যমিক পাশ হলেই যে কোনও মহিলা যে এই পদে আবেদন করতে পারেন। করেছেনও তাই। যদিও এই কাজে তাঁদের অভিজ্ঞতা নেই। প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর তপন সাধুখাঁ বলেন, “প্রার্থী বাছাইয়ের পর প্রত্যেক প্রার্থীকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি কোন রোগের লক্ষণ কী, কী ভাবে চিকিত্‌সা করা হবে, এ সব বোঝানো হবে প্রশিক্ষণে।” কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েই নিয়োগ করা হবে এই কর্মীদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত স্বনির্ভর করার লক্ষ্যেই প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগের ব্যবস্থা। প্রাণিমিত্রারা যাতে এলাকার ছাগল ও মুরগির ভ্যাকসিন দিয়ে ও চিকিত্‌সা করে উপার্জন করতে পারেন। এ ছাড়াও সরকারি প্রকল্পে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হলে তাও করানো হবে ওই কর্মীদের দিয়েই। সে ক্ষেত্রে কখনও সাম্মানিক মিলতেও পারে। এ ভাবে প্রাণিমিত্রা নিয়োগ করে কী লাভ হবে? প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের আধিকারিকদের ব্যাখ্যা, এলাকায় প্রশিক্ষিত ব্যক্তি থাকলে প্রাণী পালন বাড়বে। মুরগি ও ছাগল পালনে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, মড়ক লাগলে কী ভাবে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হয়, কোন কোন সময় ভ্যাকসিন দিতে হয়—এই সমস্ত তথ্য সহজেই পেয়ে যাবেন প্রাণী পালকেরা। একই ভাবে, ভ্যাকসিন দিয়ে বাড়ির মেয়েরাও কিছু উপার্জন করতে পারবেন। দু’দিক দিয়ে লাভবান হবেন এলাকার মানুষ। সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ।

মত্‌স্য ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সূর্য অট্ট বলেন, “মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে এলাকার মানুষ হাতের কাছে প্রাণীর চিকিত্‌সা করানোর সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া, প্রশিক্ষিত কর্মীরাও কিছুটা আয় করতে পারবেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এর মাধ্যমে প্রাণীপালনের উন্নতি ও মহিলাদের স্বনির্ভর করা- দু’টি লক্ষ্যই পূরণ করা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE