বাড়ি ফিরলেন মথুরাপুরের জয়ী চার প্রার্থী। — নিজস্ব চিত্র।
অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ‘জোর করে’ মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছিল শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। রবিবার সকালে বাড়ি ফিরে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী চার প্রার্থী। যদিও শনিবার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, ওই প্রার্থীদের অপহরণ করা হয়নি। তাঁরা নিজেরাই সুরক্ষার জন্য আত্মগোপন করেছেন। চার প্রার্থী নিজে থেকেই এ কথা জানিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছিল পুলিশ সূত্রে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঠিক উল্টো সুর শোনা গেল ওই চার জনের গলায়।
ওই চার প্রার্থীর মধ্যে কমলা মণ্ডল নামে এক জন অভিযোগ করেন, ‘‘গত ২৭ তারিখ রাতে সাড়ে ১০টা নাগাদ চারটি গাড়ি নিয়ে এসে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে যায়। সারা রাত গাড়ি চালানোর পর ভোরে একটি নদী পেরিয়ে একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয় আমাদের। সেখানে রাতে থাকার পর সকাল ৮টা নাগাদ আমাদের জলখাবার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা তখন খাওয়ার অবস্থায় ছিলাম না। সেখানে একটি সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করা হয়। সেই অবস্থায় আমরা সই করি। সেখান থেকে আবার আমাদের নিয়ে আরও একটি নদী পেরিয়ে আর একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমরা আরও এক রাত ছিলাম।’’ কমলার দাবি, ‘‘গত কাল (শনিবার) রাতে ১৪-১৫ জন পুলিশ গিয়ে আমাদের সাদা কাগজে নাম সই করতে এবং তারিখ দিতে বলে। আমরা তা করতে বাধ্য হই। তার পর ওদের শেখানো কথা বলতে বাধ্য করে। তা ভিডিয়ো করা হয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আজ জানি না উপর থেকে কী চাপ এসেছে, আমাদের সকাল পৌনে ৬টা নাগাদ বলে, ‘তোমরা ঘরে যাও।’ এর পর ওরা গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।’’
মথুরাপুরের ওই চার জনের অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। এ নিয়ে সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জয়দেব হালদার বলেন, ‘‘এই অপহরণের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
মথুরাপুরের জয়ী তিন বিজেপি প্রার্থী এবং বাম সমর্থিত এক নির্দল প্রার্থীকে পঞ্চসায়র থানা এলাকার একটি অতিথিশালা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নিশানা ছিল তৃণমূলের দিকে। কিন্তু পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার পঞ্চসায়র থানায় ওসির নামে একটি চিঠি আসে। সেই চিঠিতে ‘অপহৃত’ চার জনের সই ছিল। তাতে লেখা ছিল— ‘‘আমাদের কেউ অপহরণ করেনি। আমরা স্বেচ্ছায় গিয়েছি। আমাদের নিয়ে যেন কোনও গুজব না ছড়ানো হয়।’’ রবিবার বাড়ি ফিরে ওই চার প্রার্থী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘অপহরণ’ করার পর তাঁদের সাদা কাগজে সই করানো হয়েছিল। মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৫টি। পঞ্চায়েত ভোটে সেখানে তৃণমূল জেতে চারটি আসনে। সিপিএম পায় তিনটি এবং বিজেপি ছ’টি। দু’টি আসনে জেতেন নির্দল প্রার্থীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy