সোমেন মিত্রের প্রয়াণ বঙ্গ-রাজনীতিতে একটি অধ্যায়ের অবসান, কংগ্রেস রাজনীতিতে মহীরুহপতন। আমি ওঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থেকে রাজনীতি করিনি। ছাত্র-পরিষদে ছিলাম এবং সেখান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যুব কংগ্রেস এবং পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যুক্ত হই। কিন্তু রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সবাই জানেন, অমায়িক ব্যবহারের কারণে কী ভাবে সোমেন মিত্র তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ‘ছোড়দা' হয়ে উঠেছিলেন।
১৯৭২ সাল থেকে ২০০৬ সাল অবধি সাত বার শিয়ালদহের বিধায়ক হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি। ১৯৯২-৯৮ সালে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি এবং পরে তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনে অভূতপূর্ব ফলাফল করলে বিপর্যয়ের দায় কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ। ২০০৮ সালে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস তৈরি করেন এবং ২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। সে বার ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন। ২০১৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি কংগ্রেসে ফেরেন এবং ২০১৮ সাল থেকে আমৃত্যু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন। সোমেন মিত্রের অন্যতম অবদান বিধানভবন তৈরি করা। বরাবরই তিনি বরকত গনিখান চৌধুরী এবং প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সমর্থন পেয়েছেন। সেই অর্থে সোমেন মিত্র বড় জননেতা ছিলেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু দক্ষ সংগঠক হিসেবে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। বিধানসভা বা লোকসভার বিতর্কে তিনি সে ভাবে অংশ নিতেন না। তিনি ছিলেন মজলিশি মেজাজের মানুষ। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। এক বর্ণময় ব্যক্তিত্ব সোমেন মিত্র। পরোপকারী, সুভদ্র এই রাজনীতিকের প্রয়াণে শোকাহত। কংগ্রেসের রাজনীতিতে বড় শূন্যতার সৃষ্টি হল, যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।
(লেখক পর্যটন মন্ত্রী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy