গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত বিপুল আয়কর দিয়েছেন সরকারকে। এখন তাই জামিন চান রোজ ভ্যালি-র কর্ণধার।
বুধবার আদালতে গৌতম কুণ্ডুর জামিনের আবেদন করে তাঁর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী দাবি করেন— ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ১০০ কোটি টাকার আয়কর দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সংস্থা ওই বছরে ১১ হাজার কোটি টাকা ফেরতও দিয়েছে আমানতকারীদের। কিন্তু ইডি-র আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে যুক্তি দেন— গৌতমের আয়ের সূত্রটিই তো বেআইনি! আয়কর দিলেই সেটা আইনি হয়ে যায় না।
রোজ ভ্যালি কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর করা মামলায় ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ গ্রেফতার হন গৌতম। তার পর থেকে তিনি জেলে রয়েছেন। জেলে থাকাকালীনই সিবিআই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। এ দিন ব্যাঙ্কশালে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের কাছে গৌতমের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। সেখানেই ওই বিপুল পরিমাণ আয়কর দেওয়ার প্রসঙ্গটি তোলেন তাঁর আইনজীবী।
আদালতে ইডি-র আইনজীবী ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন— যে পদ্ধতিতে রোজ ভ্যালি টাকা তুলেছিল সেটাই তো বেআইনি! সেবি, আরবিআই-সহ বাজার থেকে টাকা তোলার জন্য যে সব সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন হয়, তার তোয়াক্কা না-করেই টাকা তুলেছেন বেআইনি এই লগ্নি সংস্থাটির মালিক।
বিচারক জানান, এই সওয়াল-জবাব আবার ১৭ জানুয়ারি শুনবেন। ৬ জানুয়ারি এই মামলায় অভিযুক্ত অন্য তিন জন সংস্থার এমডি শিবময় দত্ত, ডিরেক্টর অশোক সাহা এবং রামলাল গোস্বামীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে হাজির করার জন্য ইডি-কে নিদের্শ দিয়েছিলেন বিচারক চিন্ময়বাবু। এ দিনও বিচারক সেই প্রসঙ্গ তোলেন। ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জানান, রামলাল ত্রিপুরায় রয়েছেন। তাঁর কাছে আদালতের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। শিবময় দত্ত ও অশোক সাহা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে ভুবনেশ্বরের জেলে রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে আসার জন্য জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
এ দিন আদালতে বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘বাজারে রোজ ভ্যালির দায়ভার কত তার হিসেব না করেই কোন যুক্তিতে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হল? দু’বছর হয়ে গেল জেলে রয়েছেন গৌতম কুণ্ডু। অথচ তিনি জানলেনই না তাঁর কী অপরাধ!’’
সূত্রের খবর, সম্প্রতি বর্ধমানের গলসি থানায় এক আমানতকারী গৌতমের নামে নালিশ করার পরে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। গৌতমের আশঙ্কা, সে ক্ষেত্রে তাঁকে হেফাজতে চেয়ে রাজ্য পুলিশ বর্ধমানে নিয়ে যেতে চাইতে পারে। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, বাইরের পরিস্থিতি তাঁর জন্য অনুকূল নয়। তদন্তকারীদের দাবি, গৌতমকে জেরা করেই একের পর এক প্রভাবশালীর নাম উঠে এসেছে। দুই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাপস পালকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সুদীপের গ্রেফতারের পরে রাজ্যে বিক্ষোভে নেমেছে তৃণমূল। ঘনিষ্ঠ মহলে গৌতমের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে বেরোলে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy