Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Governor CV Ananda Bose on Jadavpur University Incident

যাদবপুরকাণ্ডের পর সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে র‌্যাগিং বিরোধী কমিটি গঠন করছেন রাজ্যপাল বোস

এই র‌্যাগিং বিরোধী কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য তথা কর্নাটক হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ড (বাঁ দিকে)। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ড (বাঁ দিকে)। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ১৯:৩১
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিং বিরোধী কমিটি গঠনে উদ্যোগী হলেন রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে একটি বৈঠকে রাজ্যপাল জানান, শুধু যাদবপুর নয়, রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি ‘র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটি’ তৈরি করা হবে। ওই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য তথা কর্নাটক হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। ওই কমিটি সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাগিং সম্পর্কিত অভিযোগ শুনবে। র‌্যাগিং আটকাতে ওই কমিটি নীতি নির্ধারণ করবে। যে হেতু এই মুহূর্তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই, তাই আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল নিজে যাদবপুরকাণ্ডে এই পদক্ষেপ করেছেন।

ওই বৈঠকে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (জুটা)-র প্রেসিডেন্ট তথা পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক পার্থপ্রতিম রায়। তিনি এই আলোচনা নিয়ে বলেন, ‘‘আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল বোস শুধু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও ডেকেছিলেন। সেখানে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের র‌্যাগিং নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, অধ্যাপকদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে বলেছেন। কমিটির মাথায় থাকবেন রবীন্দ্রভারতীর অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আমাদের তরফে জানিয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অ্যান্টি-র‌্যাগিং স্কোয়াড’ আছে। কমিটি আছে। কিন্তু কোনও প্রস্তাব এলে তা কার্যকর করবেন কে? না রয়েছেন উপাচার্য, না আছেন সহ-উপাচার্য। কোনও স্থায়ী ডিন-ও নেই। ফলত, কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। এই সব সমস্যার কথা জানিয়েছি।’’

বুধবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে বিবস্ত্র ও অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুকে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। স্বপ্নদীপের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বাবা রামপ্রসাদের অভিযোগ, ছেলের মৃত্যুর জন্য হস্টেলের সিনিয়রেরাই দায়ী। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা (সিনিয়ররা) হয়তো ভেবেছে, এই ছেলে (স্বপ্নদীপ) এখান থেকে চলে গেলে সব ফাঁস হয়ে যাবে। ওই জন্য ওকে মেরে ফেলল!’’ শুক্রবার তিনি সৌরভ চৌধুরী নামে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

নদিয়ার বগুলার ছেলে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় উঠে এসেছে র‌্যাগিংয়ের কথা। বিভিন্ন ‘প্রত্যক্ষদর্শী’ বিভিন্ন কথা বলছেন। স্বপ্নদীপের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়। প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষা দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে র‌্যাগিং সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশাবলী এবং নিয়মাবলী কমিটি তৈরি হবে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আবার এই ঘটনার ‘দায়’ আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের উপর চাপিয়েছেন। শুক্রবার ‘এডুকেশনিস্ট ফোরাম’-এর তরফে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র। তিনি বলেন, “আমি সরাসরি যাদবপুরের সঙ্গে যুক্ত। আমরা অধ্যাপনা করি। সেখানে হৃদয়বিদারক একটি ঘটনা ঘটেছে।’’ ওমপ্রকাশ দাবি করেন, আচার্যের পরামর্শদাতা কারা, তাঁদের সামনে আনা হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE