ধর্মঘটের সমর্থনে এক জমায়েতে বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্র। বুধবার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
ধর্মঘটে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, রাজ্য সরকারকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ধর্মঘট কেউ করতে চাইলে তাঁরও যে অধিকার আছে, এই সওয়ালে বুধবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি গিরীশ গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ সম্মতি জানিয়েছে বলে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের দাবি। আদালতের এই ঘটনাপ্রবাহের দিকে ইঙ্গিত করেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র দাবি করেছেন, ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার অধিকার যে মানুষের আছে, রাজ্য সরকারের তা মেনে নেওয়া উচিত।
সাধারণ ধর্মঘট বা বন্ধে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয় বলে আগেই পর্যবেক্ষণ করেছিল হাইকোর্ট। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ কাল শুক্রবারের সাধারণ ধর্মঘটকে অনুমোদন দেয়নি। ওই ধর্মঘট বেআইনি ঘোষণা করার দাবিতে জনস্বার্থে দায়ের হওয়া অন্য একটি মামলায় হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি গিরীশবাবুর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছে। পুজোর মুখে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে আর্থিক ক্ষতি হবে বলে এ দিন আদালতে জানান আইনজীবী ইদ্রিশ আলি ও দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়। ধর্মঘটে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেন ওই আইনজীবীরা। যদিও সিটুর পক্ষে আইনজীবী বিকাশবাবু দাবি করেন, ধর্মঘটে যোগ দেওয়া শ্রমিকদের অধিকার। একই সঙ্গে বিকাশবাবুর যুক্তি, বন্ধ এবং ধর্মঘটে তফাত রয়েছে। বন্ধ জোর করে সংগঠিত হয়। কিন্তু ধর্মঘটে কেউ কাজে যোগ দিতে চাইলে জোর করে বাধা দেওয়া হয় না।
ধর্মঘটের দিন পরিবহণ স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকার যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখছে, এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ দিনে রাজ্যে ১৮৫০টি সরকারি বাস চলে। ধর্মঘটের দিন নামানো হবে ২২৭০টি বাস। ট্রাম এবং ভেস্লের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। মন্ত্রীর
বক্তব্য, ‘‘গাড়ি চালকেরা নির্ভয়ে গাড়ি বার করুন। দু’টি সরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ জমা করে তিনটি কাজের দিনের মধ্যে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মিলবে।’’
বামেদের তরফে সূর্যবাবু এ দিনই বলেছেন, শাস্তির হুঁশিয়ারি এবং সরকার থেকে পুর-নিগমের তরফে পর্যন্ত হোর্ডিং, সার্কুলার দিয়ে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই চাপ উপেক্ষা করেই ধর্মঘট হবে। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘২ তারিখ আমি-সহ আমাদের নেতৃবৃন্দ রাস্তায় থাকব। শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্মঘট করতে হবে। কেউ যেন কোনও প্ররোচনায় পা না দেয়। কোনও হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে।’’ খাদ্য আন্দোলনের ‘শহিদ দিবসে’ এ দিনই ধর্মঘটের সমর্থনে পার্ক সার্কাস ও মহাজাতি সদনের সামনে থেকে বামফ্রন্ট-সহ ১৭টি দলের দু’টি মিছিল সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে এসে জড়ো হয়েছিল। সেখানে জমায়েতে বক্তৃতা করেন সূর্যবাবুরা। আবার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি পাল্টা রাস্তায় নেমেছে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে প্রচার করতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy