ভোলার দাপটে অস্থির গ্রামবাসীরা। — নিজস্ব চিত্র।
পায়ে চোট নিয়ে ভোলা যখন গ্রামে অতিথি হয়ে এসেছিল, তখন সে ছিল নিতান্তই শান্তশিষ্ট। গ্রামের লোকজন এক হয়ে সেই ‘গো’বেচারার সেবা করেছিলেন। তাঁদের সেবা-শুশ্রূষায় দিন কয়েক পর সুস্থ হয়ে ওঠে ভোলা। কিন্তু সুস্থ হতেই সব সেবাযত্নের কথা ভুলেছে ভোলা। বরং সে এখন রণমূর্তি ধরেছে। তার গুঁতোয় অতিষ্ঠ হুগলির খন্যানের পশ্চিমপাড়া। লেজবিশিষ্ট সেই ভোলার ট্যাকলে জখম হয়েছেন এলাকার চার বাসিন্দা।
বছরখানেক আগের কথা। খন্যানের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দারা দেখতে পান, এলাকায় ঘোরাফেরা করছে একটি দাবিহীন ষাঁড়। তার পায়ে চোট। অবলা জীব দেখে ষাঁড়টির সেবাযত্ন করা শুরু করেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা চাঁদা তুলে ষাঁড়টির চিকিৎসা করান। তাতে ফলও মেলে। চোট সেরে সুস্থ হয়ে ওঠে ষাঁড়টি। গ্রামবাসীরাই ষাঁড়টির নামকরণ করেন ভোলা। কিন্তু এর পরেই দেখা যায়, ভোলা তার ভোল বদলে ফেলেছে। শান্তশিষ্ট সেই প্রাণিটি হয়ে উঠেছে প্রবল মারকুটে। চার জন গ্রামবাসী ওই ষাঁড়ের গুঁতোয় জখম হয়েছেন ইতিমধ্যেই।
শুধু গুঁতোনোই নয়, চাষের জমিতে নেমে ফসল নষ্ট করেছে ভোলা। কখনও ধানের দফারফাও করে ছেড়েছে সে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, শিশু বা মহিলারা গ্রামের পথে নামতে আতঙ্কে ভুগছেন এখন। তাই গ্রাম জুড়ে শুরু হয়েছে দিন-রাত পাহারার ব্যবস্থা। শেখ কাদের আলি নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘রবি মরসুমে ধান, আলু নষ্ট করেছে ভোলা। আমন ধানের বীজ খেয়ে নিয়ে মানুষের ক্ষতিও করছে।’’
ষাঁড়ের আতঙ্কে ত্রস্ত গোটা গ্রাম। মহম্মদ মোমিনুল ইসলাম নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘আমরা চাই বনদফতর ষাঁড়টিকে ধরে নিয়ে যাক।’’ এ সব দেখে এক গ্রামবাসীর রসিকতা, ‘‘আদরে মানুষ বাঁদর হয়, আর ও তো নিতান্তই ষাঁড়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy