Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Didir Doot

‘দিদির দূত’-এর সঙ্গে হাজির ছোটরাও, বিতর্ক ব্যান্ডেলে

ব্যান্ডেলের একটি গুরুদ্বারে পুজো দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন অসিত। এর পরে কয়েকশো কর্মীকে নিয়ে ধামসা-মাদল, ঢাক পিটিয়ে মিছিল করে যান ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে।

পতাকা হাতে ছোটরা। ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে।

পতাকা হাতে ছোটরা। ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে। ছবি: তাপস।

সুদীপ দাস
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:১২
Share: Save:

‘দিদির দূত’ হয়ে এলাকায় ঘুরছেন বিধায়ক। তাঁর পাশে কচিকাঁচারা। তাদের হাতে তৃণমূলের ঝান্ডা!

শনিবার চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের জনসংযোগ কর্মসূচিতে ১০-১২ বছরের কিছু বালকের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ওই বালকেরা জানিয়েছে, এই কর্মসূচির জন্য তারা এ দিন স্কুলে যায়নি। বিরোধীরা তো বটেই শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষের একাংশও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ছোটদের শামিল করার সমালোচনা করছেন।

বিধায়ক অসিত অবশ্য দোষের কিছু দেখছেন না। দলের কর্মসূচিতে শিশুদের শামিল হওয়ার মধ্যে তিনি স্বতঃস্ফূর্ততা দেখছেন। গলদ খুঁজে পাচ্ছেন ‘নিন্দুক’দের প্রশ্নে। তাঁর দাবি, ‘‘এটাই হচ্ছে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা। বাচ্চারাও একটা প্রজন্ম, তারাও বেরিয়ে পরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে। অপব্যাখ্যা করবেন না। মানুষ যে স্বতঃস্ফূর্ত,বাচ্চা মিছিলে হাঁটছে, এটাই তার প্রমাণ।’’ ওই বালকেরা জানিয়েছে, খাবারের টোপ দিয়ে তাদের কর্মসূচিতে আনা হয়েছে।

এ দিন ব্যান্ডেলের একটি গুরুদ্বারে পুজো দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন অসিত। এর পরে কয়েকশো কর্মীকে নিয়ে ধামসা-মাদল, ঢাক পিটিয়ে মিছিল করে যান ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে। বিভিন্ন জায়গায় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন। কর্মসূচিতে উপস্থিত বালকদের কেউ পঞ্চম, ষষ্ঠ বা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তাদের বক্তব্য, ‘পাড়ার দাদা-কাকারা’ মিছিলে হাঁটতে বলেছেন। তাঁরাই পতাকা দিয়েছেন। পঞ্চম শ্রেণির এক খুদের কথায়, ‘‘এক কাকু বললেন, মিছিলে হাঁটলে দুপুরে ভাল খাবার দেবে। তাই স্কুলে না গিয়ে কাকুদের সাথে হাঁটছি।’’ কর্মসূচিতে দুপুরে খাওয়া হল মাংস-ভাত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন, ‘‘আমিও তৃণমূলের সমর্থক। কিন্তু রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা হাতে দিয়ে ছোট ছোট স্কুলপড়ুয়াদের মিছিলে নিয়ে যাওয়া হবে, এটা সমর্থন করতে পারি না।’’ এই বক্তব্য অনেকেরই।

বিষয়টি নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে তৃণমূল মিছিলে লোক পাচ্ছে না। তাই স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে হাঁটতে হচ্ছে। বাচ্চারা পড়াশোনা শিখল কী শিখল না, তাতে ওদের কী যায় আসে! তৃণমূলের হাতে শিক্ষার কী হাল, এ থেকেই স্পষ্ট।’’ নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির হুগলি জেলা কমিটির সদস্য গৌতম সরকার বলেন, ‘‘এ রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। শিক্ষা-দুর্নীতিতে একের পর এক তৃণমূল নেতার নাম জড়াচ্ছে। এমন সময়, নিজেরা কতটা শিক্ষাদরদি, তা প্রমাণ করতেই হয়তো স্কুল-পড়ুয়াদের নিয়ে মিছিলে হাঁটছেন ওই দলের নেতারা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Didir Doot controversy Bandel Minors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE