দুর্ভোগ: তিন সপ্তাহ ধরে জমে রয়েছে বৃষ্টির জল। তা পেরিয়েই চলছে যাতায়াত। বৃহস্পতিবার, হাওড়ার দাশনগরের কাশীপুর এলাকায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
প্রায় তিন সপ্তাহ আগে হওয়া ভারী বৃষ্টির জলে এখনও ডুবে আছে হাওড়ার দাশনগরের কাশীপুর এলাকা। ভাঙা রাস্তা এবং জমা জলের প্রতিবাদে কয়েক দিন আগেই হাওড়া-আমতা রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় মানুষ। দায়িত্ব নেওয়ার পরে সেই কাশীপুরের পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর নতুন চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী। পথে নেমে তো বটেই, বাড়ির বারান্দা থেকে পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মহিলারাও।
পুর কমিশনার ধবল জৈন-সহ পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিকদের নিয়ে এ দিন কাশীপুরে যান সুজয়বাবু। গিয়ে দেখা যায়, দাশনগরের ৮, ৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলের নীচে। জমা জলের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বড় বড় খানাখন্দে পড়ে প্রায় নৌকার মতো দুলছে যানবাহন। কাশীপুর রোডের আশপাশের বাড়িগুলি থেকে জল নামলেও ঘরের মধ্যে এখনও জমে রয়েছে আবর্জনা ও পাঁক।
এ দিন নিজেদের এলাকায় চেয়ারপার্সন ও পুর আধিকারিকদের সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন বাসিন্দারা। জমা জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে শুকদেব দাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দিনের পর দিন এলাকার নর্দমাগুলি পরিষ্কার হয় না। পাম্প চললেও এক ইঞ্চি জল নামে না। সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায়। গোটা রাস্তায় এত বড় বড় গর্ত যে, হেঁটে যাওয়া
যায় না।’’
রিনা ঘোষ চৌধুরী নামে এক মহিলা বাড়ির বারান্দা থেকে চিৎকার করে বলতে থাকেন, “আমরা ১৯৭৫ সাল থেকে এখানে রয়েছি। তখন দাশনগর ফাঁকা ছিল। এখন সমস্ত পুকুর ও জলাজমি ভরাট করে এত বাড়ি তৈরি হয়েছে যে, বুজে গিয়েছে নিকাশি নালা। আমাদের বাড়ির একতলার ঘরে জল জমে থাকায় আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর থেকে মুক্তি পাব কবে?”
এলাকা পরিদর্শন করে বাসিন্দাদের অভাব–অভিযোগ শোনার পরে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলেন সুজয়বাবু। পরে তিনি জানান, আগে পাম্পের সাহায্যে বার করা হবে জমে থাকা জল। তার পরে নিকাশির সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে। পাশাপাশি জল জমে থাকায় যে সব রাস্তা ভেঙে গিয়েছে, পুজোর আগেই সেগুলি সারানো হবে। চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘ওই তিনটি ওয়ার্ডে জমা জল সরাতে চারটি পাম্প চালানো হয়েছে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হাওড়া শহরের নিকাশি সংস্কারে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। তার সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই চার কোটি টাকা অনুমোদন করেছে রাজ্য সরকার।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মাস্টার প্ল্যানের বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে একটি অভিজ্ঞ বেসরকারি সংস্থাকে। তারাই ড্রোন উড়িয়ে এবং সমীক্ষা করে শহরের কোথায় কোথায় নিকাশির সমস্যা রয়েছে, তার একটি নকশা তৈরি করবে। সেই অনুযায়ী তৈরি হবে মাস্টার প্ল্যান। পুর ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, হাওড়ার নিকাশি সমস্যার সমাধানে এটাই একমাত্র পথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy