শ্রীরামপুর আদালত এবং বলাগড়ের ব্লক অফিসে বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
বকেয়া ডিএ-সহ কয়েক দফা দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কর্মবিরতির তেমন ছাপ পড়ল না দুই জেলায়। আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য কর্মবিরতিতে যোগ না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল শিক্ষক সংগঠনগুলি। সোমবার দুই জেলার শিক্ষকদের অনেকেই ‘কালো ব্যাজ’ পরে কাজে যোগ দেন। ব্লক কার্যালয় ও সরকারি দফতরেও কাজ হয়েছে। তবে দুই জেলার আদালতগুলি আংশিকবন্ধ ছিল।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা-১ ও ২, বাগনান-১ ও ২ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার দিনভর পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। উদয়নারায়ণপুরের বিডিও সুব্রত সিট বলেন, ‘‘কেউ কোনও প্রয়োজনে এসে ফিরে যাননি। কার্যালয়ে পুরোদমে কাজ হয়েছে।’’ জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘অন্য দিনের থেকে এ দিন সরকারি কর্মীদের হাজিরা বেশি ছিল। কাজেও কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।’’ এ দিন হুগলির বলাগড়ের জিরাটের ব্লক অফিসে বিরতির সময় প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান সরকারি কর্মচারীরা। তবে তার জেরে কাজে ব্যাঘাত হয়নি।
শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র হাওড়া জেলার সহ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজ্যগত ভাবেই আমাদের সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, মাধ্যমিকের জন্য কোনও কর্মবিরতি পালন করা হবে না। তবে কালো ব্যাজ পরে আমরা প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছি। ভবিষ্যতে জোরদার আন্দোলন করা হবে।’’ হুগলির শিক্ষাক্ষেত্রেও কর্মবিরতির কোনও প্রভাব পড়েনি। আজ, মঙ্গলবার কালো ব্যাজ পড়ে ‘দাবি দিবস’ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান জেলার নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) শাখা সম্পাদক অসিত মালিক।
তবে এ দিন পান্ডুয়ার মুজিবর রহমান হাইস্কুলের শিক্ষকরা কোনও ক্লাস নেননি। স্কুলের এক পড়ুয়া বলে, ‘‘সময়মতো ঘণ্টা পড়েছে। কিন্তু কেউ পড়াতে আসেননি।’’ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অয়ন বসু বলেন, ‘‘দু’দিনই কর্মবিরতি চলবে আমাদের। তার পরিবর্তে শনি ও রবিবার অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হবে।’’
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের হুগলির কর্মকর্তাদের দাবি, জেলায় কর্মবিরতির প্রভাব ছিল ভাল। মঞ্চের আহ্বায়ক এবং মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির হুগলি জেলার সদর মহকুমা সম্পাদক কুমুদ মণ্ডল বলেন, ‘‘কোনও আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে সরকার কোনও পদক্ষেপ করলে আন্দোলন তীব্রতর হবে।’’ দাবি না মানলে পঞ্চায়েত ভোটে ‘ডিউটি’ না করার ফের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
তবে দুই জেলারই আদালতগুলিতে এ দিন কাজ ব্যাহত হয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে কর্মবিরতির আংশিক প্রভাব পড়ে। পকসো আদালতে পুরোপুরি ও ফৌজদারি আদালতে আংশিক কাজ হয়। তবে দেওয়ানি আদালতে কাজ বন্ধ ছিল। এ দিন হুগলির আরামবাগ আদালত বন্ধ ছিল। শ্রীরামপুর আদালতের গেট আটকে পশ্চিমবঙ্গ আদালত কর্মচারী সমিতির তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আদালতে কাজে এসে ফিরে যেতে হওয়া ক্ষোভ জানান বিচারপ্রার্থীরা।
এ বিষয়ে রাজ্য আদালত কর্মচারী সমিতির হুগলি জেলা কমিটির সম্পাদক কৃশানু সু বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমরা দায়িত্ব পালন করে চলেছি। এ বার আমাদের দাবি মানার সময়ও এসেছে। সরকার হুমকি বা ফতোয়া জারি করে আমাদের আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা তা প্রতিহত করব। বকেয়া পাওনা না মেটালে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy