হতাশ ফুলচাষি। বাঁকুড়দহ গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
মাঘ মাস পড়তেই শুরু হয়েছে বিয়ের মরসুম। ফেব্রুয়ারি মাসে আসছে প্রেম দিবস। এই সময় গোলাপের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। ব্যস্ততার সীমা থাকে না গোলাপচাষিদের। তবে গত কয়েক বছর ধরে এই চাষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ছত্রাক। তার জেরে গোলাপ গাছের পাতা ঝরে যাচ্ছে। মরে যাচ্ছে গাছ। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গোলাপ ফুল।
এই পরিস্থিতিতে কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে চাষিদের। চিন্তিত জেলা কৃষি দফতরও। উপ অধিকর্তা রামপ্রসাদ ঘোষ জানান, গত কয়েক বছর ধরে জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে এই ছত্রাকের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের এনে নমুনা সংগ্রহ করে ছত্রাক চিহ্নিত করা হয়েছে। কিছু প্রতিষেধক ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তা পুরোপুরি ধংস করা যায়নি। রামপ্রসাদের কথায়, ‘‘চলতি বছরেও ব্যাপক সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর প্রতিষেধকের সন্ধানে গবেষণা চলছে।’’
হাওড়া গ্রামীণের বাগনান-২ ব্লকের ওড়ফুলি, শরৎ, মুগবেনাপুর, আন্টিলা, বাঁটুল প্রভৃতি এলাকা ফুল চাষের জন্য প্রসিদ্ধ। আবার চাষিদের অধিকাংশই গোলাপচাষের সঙ্গে যুক্ত। চাষিরা জানান, যে সব জায়গায় প্রতিষেধক স্প্রে করা হয়েছিল, সেখানে যেমন সংক্রমণ হয়েছে অন্য গাছও সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ওড়ফুলির চাষি পুলক ধাড়া বলেন, ‘‘গত বছরে কৃষি দফতর প্রতিষেধক স্প্রে করায় ভেবেছিলাম এ বছর আর সংক্রমণ হবে না। ফলে বেশি করে গোলাপ চারা লাগিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার আরও বেশি ক্ষতি হচ্ছে।’’ সমর ধাড়া নামে আরও এক চাষির কথায়, ‘‘এক মাস বাদে মেয়ের বিয়ে। গোলাপ থেকে খরচ তুলব ভেবেছিলাম। গাছ তো নষ্ট হয়ে গেল। বিপাকে পড়েছি।’’
ফলন কমায় গোলাপের দাম বাড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চাষিরা। তাঁদের আশঙ্কা, বাজারে গোলাপের দাম বাড়লে বিক্রিও কম হবে। বাঁটুলের এক চাষির খেদ, ‘‘গোলাপ চাষ করে ক্ষতি হয়েছে। আবার চাষ শেষে বিক্রিতে ভাটা পড়লেও ক্ষতি। কী করব, জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy