উদ্বেগে শুভ সর্দারের (ইনসেটে) মা গীতাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।
মিজ়োরামের সাইরাং এলাকায় নির্মীয়মাণ রেলসেতু দুর্ঘটনায় বরাতজোরে রক্ষা পেয়েছেন ‘সাইট ইঞ্জিনিয়ার’ শুভ সর্দার। হুগলির ব্যান্ডেলের দক্ষিণ নলডাঙার বাসিন্দা ওই যুবক সেতুর নীচের অংশে কাজ করছিলেন। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই সেতু ভেঙে পড়তেই পাহাড়ের খাদে একটি পিলারে আটকে পড়েন তিনি। প্রাণে বেঁচে যান। তবে, প্রায় চার ঘণ্টা ওই অবস্থাতেই আটকে ছিলেন। বেলা দু’টো নাগাদ তাঁকে উদ্ধার করে জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীরা।
শুভর সহকর্মী, আসানসোলের যুবক রাহুল পাল কাছেই ছিলেন। বিকট শব্দে তিনি ঘটনাস্থলে ছোটেন। বৃহস্পতিবার মিজ়োরাম থেকে ফোনে রাহুল জানান, ওই সেতুতে ২৯ জন কাজ করছিলেন। ২৩ জন উপরে, ৬ জন নীচে। উপরে থাকা প্রত্যেকে মারা যান। পিলারের খাঁজে আটকে থাকা শুভকে বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল না। তাঁকে উদ্ধারে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের বেগ পেতে হয়। হাসপাতালে আইসিসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে বৃহস্পতিবার সাধারণ শয্যায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। চিকিৎসক জানান, মাথা-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে চোট লেগেছে। তবে, সিটি
স্ক্যান এবং এক্সরে-র রিপোর্টে খারাপ কিছু মেলেনি।
২০২০ সালে বি-টেক (মেকানিক্যাল) পাশ করেন শুভ। বছর দুয়েক আগে বেসরকারি নির্মাণ সংস্থায় ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরিতে যোগ দেন। সেই সংস্থাই মিজোরামের ওই রেলসেতু তৈরির বরাত পেয়েছিল।
শুভর বাবা স্বপন এবং মা গীতা সর্দার কারখানার কর্মী। তাঁদের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে শুভ ছোট। দম্পতি জানান, ব্যান্ডেল বিদ্যামন্দিরের ছাত্র শুভ ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে চুঁচুড়ার বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি-টেক পাশ করেন। মা গীতা জানান, চলতি মাসে দিন পনেরোর ছুটিতে ছেলের বাড়ি আসার কথা ছিল। কিন্তু, দিন দশেক আগে ফোনে জানান, কাজের চাপে ছুটি বাতিল হয়েছে। বলেছিলেন, পুজোয় আসবেন। মায়ের কথায়, ‘‘ছেলে এখন ভালয়-ভালয় ফিরে আসুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy