Advertisement
০৬ মে ২০২৪
নিরাপত্তা কই, প্রশ্ন উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দাদের

ফের গুলি রাতের শ্রীরামপুরে

ফের গুলি চলল রাতের শহরে। সোমবার শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছেই লাহিড়িপাড়া এলাকায় গুলিতে জখম হন এক ইমারতি ব্যবসায়ী। পুলিশের অবশ্য দাবি, গুলি নয়। ছুরি বা ভোজালি জাতীয় কোনও অস্ত্রের আঘাতে ঘায়েল হয়েছে ওই ব্যবসায়ী।

ঘটনাস্থল: এখানেই গুলি চলে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থল: এখানেই গুলি চলে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

শ্রীরামপুর
প্রকাশ পাল শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৪
Share: Save:

ফের গুলি চলল রাতের শহরে।

সোমবার শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছেই লাহিড়িপাড়া এলাকায় গুলিতে জখম হন এক ইমারতি ব্যবসায়ী। পুলিশের অবশ্য দাবি, গুলি নয়। ছুরি বা ভোজালি জাতীয় কোনও অস্ত্রের আঘাতে ঘায়েল হয়েছে ওই ব্যবসায়ী। আদৌ সোমবার রাতে ওই এলাকায় গুলি চলেছে কি না তা তদন্ত করে দেখতে হবে। জখম ওই যুবক বা তার পরিবারের তরফে মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগও দায়ের করা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, তাঁরা রাতে গুলির শব্দ শুনেছেন। লাহিড়িপাড়া শহরের একেবারে খাস এলাকা। সেখানে পুলিশের টহলও চলে। অথচ তার মধ্যেই রাত সাড়ে দশটা নাগাদ এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আর এই প্রসঙ্গেই শহরের বাসিন্দারা এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুবীর পাল নামে জখম ওই যুবক ওই এলাকাতেই একটি ফ্ল্যাটে থাকে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় দুষ্কৃতীমূলক কাজের অভিযোগও রয়েছে। এর আগে পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিল। সোমবার রাত সওয়া ১০টা নাগাদ বাড়ির কাছেই একটি মোড়ে আড্ডা দিচ্ছিল সুবীর। অভিযোগ, সেই সময়ই ৫-৬ জন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে চেপে এসে তার উপর চড়াও হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় সুবীরকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গু‌লি তার কাঁধ ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে।

সুবীরের মামা অমিত মাইতির কথায়, ‘‘সুবীর হেঁটে বাড়ির দিকে আসছিল। তখন দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। তাতেই ভাগ্নের কাঁধে গুলি লেগে গিয়েছে। কে বা কারা গুলি চা‌লিয়েছে, জানি না।’’ তাঁর দাবি, সুবীরের বিরুদ্ধে এক সময় সমাজবিরোধীমূলক কাজের অভিযোগ উঠলেও এখন সে ‘অসৎ সঙ্গ’ ত্যাগ করেছে।

রাতেই শ্রীরামপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে যায়। পুলিশের বক্তব্য, আদপে গুলি ‌লাগেনি। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের বক্তব্য, গুলি চলার অভিযোগ আসেনি। তদন্তকারীদের দাবি, দাগি সমাজবিরোধীদের হয়ে এলাকায় তোলাবাজি করার অভিযোগ রয়েছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। এ দিনের ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নেপথ্যে যাই থাক, রাতের শহরে গুলিচালনার ঘটনা নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। কয়েক বছর আগে দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে এলাকার মণ্ডপে এক দুষ্কৃতী খুন হয়। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার জেরে সন্ধ্যার পর থেকেই এলাকা সুনসান হয়ে যেত। এখন আবার সেই পরিস্থিতি না হয়!’’ স্থানীয় এক কলেজছাত্রীর বক্তব্য, ‘‘দশটা-সাড়ে দশটা কী আর এমন রাত! মাঝেমধ্যেই তো এই সময়ে ফিরতে হয়। প্রকাশ্য রাস্তায় দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়ালে মহিলাদের নিরাপত্তা কোথায়?’’

এ দিনের ঘটনাকে অবশ্য তেমন আমল দিতে নারাজ শ্রীরামপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি গৌরমোহন দে। তাঁর দাবি, ‘‘এক সময় বোমার আওয়াজ শুনে শ্রীরামপুরের মানুষ ঘুমোতে যেত। এখন তেমন অপরাধ কমে গিয়েছে। সোমবার রাতের ঘটনার কিনারা করতে পুলিশ চেষ্টা করছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’

তবে এত সহজে চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না শহরের বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, দুষ্কৃতীদের গুলির লড়াইয়ে যেন সাধারণ মানুষের শান্তি নষ্ট না হয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Serampore Gun battle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE