টোটো আর অটোর দ্বৈরথ থামছেই না শ্রীরামপুরে। বচসা থেকে মারপিট, থানা-পুলিশ লেগেই রয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। বৃহস্পতিবার রাতে স্টেশন সংলগ্ন নেতাজি সুভাষ অ্যাভেনিউতে এক অটোচালককে মারধরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। টোটো সংগঠনের এক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
অটোচালকদের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরেই কয়েকশো অটো শ্রীরামপুর শহরের যত্রতত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে তাঁদের রুজিতে টান পড়ছে। প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকেও টোটো এসে যাত্রী তুলছে। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে পুরসভাকে টোটো চলাচলের অনুমতি দিতে বলা হয়। পুর-কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন শহরে শ’দেড়েক টোটোকে যাত্রী পরিবহণের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। কিন্তু বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত করেনি তারা। তবে পুরসভার তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, পুরভবনের সামনে থেকে ধুপি ঘাট পর্যন্ত রাস্তায় বা বিপি দে স্ট্রিটে টোটো দাঁড়াতে পারবে না, যাত্রীও তুলতে পারবে না। অটোচালকদের অভিযোগ, টোটো চালকরা সে কথার কোনও গুরুত্বই দিচ্ছেন না। এর ফলেই দু’পক্ষের গোলমাল বাধছে।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ নেতাজি সুভাষ অ্যাভেনিউতে কয়েক জন টোটো চালক এক অটোচালককে মারধর করে। হুমকিও দেওয়া হয়। অন্য দুই অটোচালক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান শ্রীরামপুর থানার আইসি প্রিয়ব্রত বক্সি। ততক্ষণে অবশ্য হামলাকারীরা পালিয়ে গিয়েছে। প্রহৃত অটোচালক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে টোটো সংগঠনের এক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
দিন কয়েক আগে নেতাজি সুভাষ অ্যাভেনিউতে অটোস্ট্যান্ডের কাছে দু’পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। অটোচালকরা একটি টোটো উল্টে দেন বলে অভিযোগ। শেষমেশ পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরের দিন মাহেশেও জিটি রোডের উপরে বচসায় জড়ান দু’পক্ষের চালকরা। গোলমালের জেরে যানজট হয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তায়। অটোচালকদের বক্তব্য, নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে যেখানে খুশি টোটো চলায় তাঁরা প্রতিবাদ করছেন। কেননা, এ ভাবে তাঁরা মার খাচ্ছেন। আর টোটোচালকদের পাল্টা দাবি, তাঁরা বেকার। সংসার চালাতেই এই পেশা বেছে নিয়েছেন। প্রশাসন তাঁদের ছাড়পত্র দিক। কিন্তু অটোচালকরা কেন তাঁদের বাধা দেবেন?
পুর-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দিনের পর দিন টোটোর সংখ্যা বাড়ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কয়েকটি জায়গায় টোটো দাঁড়ানো বা সেখান থেকে যাত্রী তোলায় নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু টোটোকে শহরে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে। সব আবেদন এখনও হাতে আসেনি। তবে দু’-এক দিনের মধ্যেই বিষয়টি ঠিক করে ফেলা হবে।”
পুলিশের বক্তব্য, যে হেতু পুরসভা এখনও কোনও টোটোকে ছাড়পত্র দেয়নি, সেই জন্য তারা এই ধরনের কোনও গাড়িকে আটকাতে পারছেন না। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয় সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুরসভা অনুমোদিত টোটোর তালিকা হাতে পেলেই তারা বাকি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy