Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

কাস্তে-হাতুড়ি-তারায় ভরসা বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের

কয়েক মাস আগে উলুবেড়িয়া লোকসভার উপ-নির্বাচনে যে কার্যালয় থেকে তৃণমূলের দলীয় কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, তা এখন পরিণত হয়েছে সিপিএমের কার্যালয়ে! মুছে গিয়েছে তৃণমূলের সব চিহ্ন।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ০৩:১৭
Share: Save:

তাঁরা বিক্ষুব্ধ হলেও তৃণমূলের। কিন্তু ভোটে জিততে হাতিয়ার সিপিএমের প্রতীক!

উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বহিরা পঞ্চায়েতের বহিরা হেলুপাড়ায় ৫৯ নম্বর বুথের বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এখন সিপিএমের পতাকা ঘাড়ে করেই প্রচারে পাড়া কাঁপাচ্ছেন। তাঁদের প্রার্থী জিন্নাতুন বেগমকে বলা হচ্ছে, ‘বামফ্রন্ট সমর্থিত নির্দল’। কয়েক মাস আগে উলুবেড়িয়া লোকসভার উপ-নির্বাচনে যে কার্যালয় থেকে তৃণমূলের দলীয় কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, তা এখন পরিণত হয়েছে সিপিএমের কার্যালয়ে! মুছে গিয়েছে তৃণমূলের সব চিহ্ন।

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ওই এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এ ভাবেই প্রকট হয়েছে। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ অংশের নেতা আজিজুর রহমানের কথায়, ‘‘প্রার্থী বাছাইয়ের সময়ে কর্মী-সমর্থকদের মতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। নেতৃত্বকে সবক শেখাতেই এটা করলাম।’’

বিষয়টিতে কিছুটা অবাক স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ প্রার্থী অজয় মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বড় দল। সবাইকে প্রার্থী করা যায় না। তা বলে বিক্ষুব্ধেরা এমন করবেন, ভাবিনি। সিপিএমেরও বলিহারি। নিজেরা প্রার্থী দিতে পারেনি। যাকে-তাকে প্রতীক বিলি করছে। যে সব বিক্ষুব্ধ এ সব করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে।’’

২০১৩-র ভোটে জেতেন তৃণমূল প্রার্থী মনিরুল ইসলাম। বহিরা পঞ্চায়েতটিও ছিল তৃণমূলের দখলে। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, গতবার মনিরুল কাজ না-করায় এ বার প্রার্থী বদলের আবেদন জানানো হয়। কেউ কর্ণপাত করেননি। আসনটি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় মনিরুলের স্ত্রীকে প্রার্থী করা হয়।

এর পরেই দলের বিক্ষুব্ধেরা জিন্নাতুন বেগমকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র পেশ করান। দলের পক্ষ থেকে তাঁর প্রার্থীপদ তুলে নিতে বলা হলে আজিজুররা গ্রামে সিপিএমের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আজিজুর বলেন, ‘‘গতবার কাজ না-করায় মনিরুলের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ রয়েছে। ঠিক হয়, নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সুবিধা হবে না। ভাল প্রতীক দরকার। তারপরেই সিপিএমের কাছে আবেদন করি।’’

বহিরা পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনের মধ্যে সিপিএম এ বার ১১টিতে প্রার্থী দিতে পেরেছে। হেলুপাড়ায় তারা প্রার্থী দিতে পারেনি। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের দাবিকে মান্যতা দিতেই আমরা ওই প্রার্থীকে প্রতীক দিয়েছি।’’

আজিজুররা অবশ্য জানিয়েছেন, পরিস্থিতির খাতিরে তাঁরা সিপিএমের হাত ধরেছেন। কেউ সিপিএমে যোগ দেননি। গ্রামের সিপিএম নেতা শেখ আজাদ বলেন, ‘‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে এটা সাধারণ গ্রামবাসীর লড়াই। তাই আমরা সিপিএমের পক্ষ থেকে জিন্নাতুনকে সমর্থন করেছি।’’ সিপিএমের পতাকা থাকলেও জিন্নাতুনের মিছিলে তাই ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ শোনা যাচ্ছে না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE