Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

‘টেবিল ফ্যান’-এ ভোট, মাজুতে প্রচার শাসকের

রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের রমরমা। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে দলের এক প্রার্থীকে লড়তে হচ্ছে ‘টেবিল ফ্যান’ প্রতীকে! খাতায়-কলমে তিনি অবশ্য ‘নির্দল’।জগৎবল্লভপুরের মাজু পঞ্চায়েতের একটি আসনে মোসলেমা বেগম নামে ওই ‘নির্দল’ প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেতারা।

প্রচার: একই ফ্লেক্সে দুই প্রতীক। বেরিয়েছে প্রচার মিছিল। ছবি: সুব্রত জানা

প্রচার: একই ফ্লেক্সে দুই প্রতীক। বেরিয়েছে প্রচার মিছিল। ছবি: সুব্রত জানা

নুরুল আবসার
জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০১:২১
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের রমরমা। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে দলের এক প্রার্থীকে লড়তে হচ্ছে ‘টেবিল ফ্যান’ প্রতীকে! খাতায়-কলমে তিনি অবশ্য ‘নির্দল’।

জগৎবল্লভপুরের মাজু পঞ্চায়েতের একটি আসনে মোসলেমা বেগম নামে ওই ‘নির্দল’ প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেতারা। দলের পক্ষ থেকে একই ফ্লেক্সে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ প্রার্থীদের জোড়াফুল চিহ্নে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানো হলেও পঞ্চায়েতের প্রার্থী মোসলেমার নাম প্রচার করা হচ্ছে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থী হিসাবে!

কিন্তু ভোটের মুখে প্রচারে বেরিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত সাধারণ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। দলীয় প্রতীক ছাড়া মোসলেমার হয়ে প্রচারে গ্রামবাসীরা কতটা সাড়া দেবেন, তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ে। জগৎবল্লভপুর কেন্দ্র তৃণমূল সভাপতি বিমান চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘পদ্ধতিগত কারণে মোসলেমা প্রতীক পাননি। দল তাঁর পাশে আছে। ফলে, প্রতীক না-পাওয়াটা কোনও সমস্যা হবে না।’’

মাজু পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৮। তৃণমূলের ১৭ জন প্রার্থী লড়াই করছেন জোড়াফুল চিহ্নে। মউলগাছিতে ১ নম্বর সংসদে মোসল‌েমা লড়ছেন ‘টেবিল ফ্যান’ চিহ্নে। কারণ হিসেবে দলের কেউ কেউ অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করেছেন।

তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতের প্রতিটি আসনে দু’জন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন।

১ নম্বর সংসদে মোসলেমার সঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেন হোসনেয়ারা বেগম। পরে দলের নির্দেশে হোসনেয়ারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। কিন্তু ২৮ এপ্রিল প্রতীক বিলির সময়ে দেখা যায়, হোসনেয়ারার নামেই এ সংক্রান্ত চিঠি জমা পড়েছে। মোসলেমার নামে কোনও চিঠি আসেনি। হোসনেয়ারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় তাঁকে প্রতীক দেওয়া যায়নি। কিন্তু মোসলেমার নামে কোনও চিঠি না-আসায় তিনি ‘নির্দল’ হিসেবে চিহ্নিত হন।

মাজু পঞ্চায়েতটি বর্তমানে সিপিএমের দখলে রয়েছে। তবে, মউলগাছি গ্রামের ১ নম্বর সংসদটিতে তৃণমূলের প্রভাব বেশি। ২০০৮ সাল থেকে এই আসনটিতে জিতে আসছে তৃণমূল। ২০১৩ সালে মোসলেমা এই আসনে জিতেছিলেন। সেখানে এ বার তাঁকে ‘নির্দল’ হিসেবে লড়তে হচ্ছে। প্রচারে বেরিয়ে জগৎবল্লভপুর কেন্দ্র তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছেন। প্রদীপবাবু বললেন, ‘‘মোসলেমা আগের পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। তিনি আমাদের দলেরই প্রার্থী। শুধু প্রতীকটি আলাদা।’’

মউলগাছির দেওয়ালে দেওয়ালে অবশ্য এখনও হোসনেয়ারার নামে প্রচার রয়ে গিয়েছে। শেখ আসাদুল, জুলফিকার আলি, অভিজিৎ ঘোষের মতো কয়েকজন তৃণমূল কর্মী জানান, নেতাদের কথামতোই তাঁরা হোসনেয়ারার নামে দেওয়াল লিখেছিলেন। পরে জানতে পারেন মোসলেমা প্রার্থী হবেন। কিন্তু এই আসনে যে শেষ পর্যন্ত দলের কোনও প্রতীক বা প্রার্থীই থাকবেন না, তা তাঁরা ভাবতে পারছেন না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE