ভঙ্গুর: এই সেই ভেঙে যাওয়া পাখা। নিজস্ব চিত্র
ক্লাস চলাকালীন আচমকা সিলিং ফ্যান ভেঙে পড়ায় জখম হল আরামবাগের তিরোল হাইস্কুলের চার ছাত্রী। এক ছাত্রীর মাথার একাংশ কেটে যাওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে এই দুর্ঘটনায় ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক— সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আলো-পাখার মতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতারও অভিযোগ ওঠে। প্রধান শিক্ষক অপরেশকুমার মণ্ডল স্বীকার করেছেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে আলো-পাখাগুলি পরীক্ষা করা হয়েছিল। তার পরে যখন যেটি খারাপ হয়, সেটি সারানো বা পাল্টানো হয়।’’ একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘‘এ বার দু’এক দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ পরীক্ষা করে তবেই সিলিং ফ্যানগুলি চালানো হবে।’’ স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি সুদীপ্ত চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘সাত থেকে পনেরো দিন অন্তর সব পাখা পরীক্ষা এবং পরিচ্ছন্ন করা হয়।’’
এই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরে হুগলির সব স্কুলকে দ্রুত সিলিং ফ্যান পরীক্ষার নির্দেশ দেন জেলা স্কুল পরিদর্শক শুক্লা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর গরমের আগে সিলিং ফ্যানগুলি পরীক্ষা করলে এই বিপদ এড়ানো যায়।’’
ওই স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দোতলার একটি ঘরে তখন দশম শ্রেণির ‘বি’ বিভাগের ইংরেজি ক্লাস চলছিল। ছাত্রছাত্রীরা দু’টি আলাদা সারিতে বসেছিল। ছাত্রীদের দিকের প্রথম বেঞ্চের উপরেই ঘুরছিল সিলিং ফ্যানটি। ওই বেঞ্চেই বসে ছিল অঙ্কিতা সোম, কেয়া বারিক, মহসিনা খাতুন এবং সাগরিকা অধিকারী নামে চার ছাত্রী। ফ্যানটি ভেঙে অঙ্কিতার সামনে ব্যাগের উপরে এসে পড়ে। ফ্যানের ব্লেডের আঘাতে অঙ্কিতার ডান কানের উপরে মাথার কিছুটা কেটে গিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। বাকি তিন জনের কারও হাতে, কারও কাঁধে, কারও গালে চোট লাগে। শিক্ষকেরা সঙ্গে সঙ্গে তাদের আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও অঙ্কিতাকে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে অঙ্কিতা বলে, ‘‘অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি। এখন এখানে সিলিং ফ্যান দেখেও ভয় লাগছে।” তার বাবা জ্ঞানগুরু সোম বলেন, ‘‘বড় বিপদ হতে পারত। আর যাতে এমন দুর্ঘটনা না হয়, সে বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলেছি।”
বিকেলে স্কুল ছুটির পরেও ছাত্রছাত্রীদের দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক সুকুমার সরকার জানান, ফ্যানের চাকতির সঙ্গে যে রডটি লাগানো থাকে সেটিই কেটে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। দোতলা ওই স্কুলে শ্রেণিকক্ষ নিয়ে মোট ঘরের সংখ্যা ৫০। প্রতিটি ঘরে ৪-৬টি সিলিং ফ্যান রয়েছে। অধিকাংশই পুরনো। ফ্যানের গায়ে ধুলোর পুরু স্তর দেখলেই বোঝা যায়, বহুদিন ঝাড়পোঁছ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy