ডেঙ্গির প্রকোপ এখনও কতটা— শ্রীরামপুরে এসে তা সরেজমিন দেখলেন কেন্দ্র স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক। এলাকাবাসীর সচেতনতার অভাবই ডেঙ্গি ছড়ানোর প্রধান কারণ বলে চিহ্নিত করেন তিনি।
দিন কয়েক আগে রাজ্যের ডেপুটি ডিরেক্টর (ম্যালেরিয়া) অধীপ ঘোষ শ্রীরামপুরে এসে ডেঙ্গি আক্রান্ত এলাকা ঘুরে গিয়েছেন। তার পরে সোমবার কেন্দ্রের অতিরিক্ত সিনিয়র রিজিওনাল ডিরেক্টর চিকিৎসক তপনকুমার ভট্টাচার্য এখানে আসেন। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে গিয়ে সুপার কমল কিশোর সিংহের সঙ্গে কথা বলেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বেশ কিছু দিন ধরেই আশপাশের এলাকা থেকে এই হাসপাতালে প্রচুর জ্বরের রোগী এসেছেন। অনেকের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুও মিলেছে। এর পরে তপনবাবু পুরসভার চেয়ারম্যান অমিয় মুখোপাধ্যায়, স্বাস্থ্য আধিকারিক, কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক সেরে তপনবাবু বলেন, ‘‘ডেঙ্গির প্রকোপ কিছুটা কমেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং পুরসভা ভালই কাজ করছে। কিন্তু সচেতনতা না বাড়লে একে নিয়ন্ত্রণ করা খুব মুশকিল।’’ পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সচেতনতা বাড়ানোয় জোর দেওয়া হবে। প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকেও ডেঙ্গি-প্রতিরোধ অভিযানে সামিল করার চেষ্টা করা হবে। পুরসভার ‘ন্যাশনাল আরবান হেলথ্ মিশন’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত শৌভিক পাণ্ডে বলেন, ‘‘আমাদের হাতে মাত্র ৩ জন্য ল্যাবোরেটরি টেকনিশিয়ান আছেন। তার মধ্যে এক জন ওয়ালশ হাসপাতালে বসছেন। এই পরিকাঠামোতেই সাধ্য মতো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’
মাস খানেক ধরে এই শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দেয়। এলাকার চিকিৎসকেরা এ ব্যাপারে আগে থেকেই সাবধান করে আসছিলেন। যদিও, প্রথম দিকে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি সে ভাবে তৎপর হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি পরিস্থিতির কথা জেনে স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী শশী পাঁজার সঙ্গে কথা বলেন। এর পরেই প্রশাসন কোমর বেঁধে নামে। জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল ওয়ালশ হাসপাতালে এসে বৈঠকও করেন। শহরে তিনটি জায়গায় ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা হয়। ১৮ জুলাই থেকে ওই ক্লিনিকে দু’বেলা ডাক্তার বসছেন। রক্ত পরীক্ষা করানো হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই কারও না কারও রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন শ্রীরামপুরে আসেন তপনবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ ২ অরবিন্দ তন্ত্রী, এসিএমওএইচ (শ্রীরামপুর) মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় পাল, পতঙ্গবাহিত রোগ বিষয়ে পরামর্শদাতা শ্রাবণী মল্লিক।
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘উনি সচেতনতা বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন। আমরাও সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাড়ি বাড়ি অভিযান চলছে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে নাগরিকরা তাঁদের বাড়িতে বা ফ্ল্যাটে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছেন না। অথচ বাড়ির ভিতরে টবে, ফ্রিজের ট্রে-তে, চৌবাচ্চায় জমা জলে মশার লার্ভা মিলেছে। কেউ যদি বাড়িতে ঢুকতে না দেন, সে ক্ষেত্রে কী করা হবে তা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy