ফুল চাষিরা আগ্রহ দেখাননি। তাই তিন বছর ধরে অচল বাগনান ফুল বাজারকে এ বার মাছ-বাজারে পরিণত করার কথা ভাবছে রাজ্য বিপণন পর্ষদ।
রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ প্রকল্পে খালোড় মৌজায় ২০টি স্টলের ফুল-বাজারটি তৈরিতে খরচ হয়েছিল ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। যৌথ ভাবে টাকা দেয় কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য উদ্যানপালন বিভাগ। জমিটি রাজ্য বিপণন পর্ষদের। পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘এত টাকা বিনিয়োগ করে বাজারটি তৈরি করা হয়েছে। সেটিকে তো আর ফেলে রাখা যায় না। তাই মাছ বাজার হিসাবে যদি এটা চালু করা যায় সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’ তা হলে ফুল-বাজারটি কোথায় হবে? পর্ষদের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, মানকুর মোড়ের কাছে বাগনান কিসান মান্ডিটি চালু হয়ে গেলে তার একটি অংশে ফুলচাষিদের বসানো হবে।
হাওড়া জেলা রাজ্যের মধ্যে ফুল চাষে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। বাগনান-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় ফুল চাষ হয়। চাষিরা ফুলের গাঁট মাথায় করে কলকাতার জগন্নাথ ঘাটে যান বিক্রি করতে। সকালের দিকে কোলাঘাটে বসে ফুলের বাজার। সেখানেও যান অনেকে। মূলত বাগনানের এইসব ফুল চাষিদের দাবি মেনেই বাগনান ফুল বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য বিপণন পর্ষদ। স্টল ভাড়া নিয়ে চাষিরা দোকান করতে পারতেন। পাইকারি এবং খুচরো দু’ধরনের ব্যবসারই সংস্থান ছিল। কিন্তু কোনও পরিকল্পনাই কাজে আসেনি।
বছরখানেক আগে বাজারের স্টল বিলির জন্য আবেদনপত্র চাওয়া হয়। কিন্তু আবেদনকারীদের মধ্যে ফুল চাষি তেমন ছিলেন না। টেলারিং, বিউটি পার্লার, সেলুন, মনোহারি প্রভৃতি দোকান করতে চেয়ে দরখাস্ত জমা পড়ে। সেগুলি পত্রপাঠ বাতিল করা হয়। তার পর থেকেই বাজারটি পড়ে রয়েছে। চালু হয়েও বন্ধ পড়ে রয়েছে বাজার সংলগ্ন হিমঘরটিও।
ফুলচাষিদের অনাগ্রহের কারণ কী? চাষিরা জানান, এই বাজার থেকে ফুলের গাঁট নিয়ে সরাসরি রেলস্টেশনে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই। ফলে, অনেকটা ঘুরে তাঁদের স্টেশনে যেতে হবে। অথচ, রেল হল ফুল পরিবহণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। পর্ষদের কর্তারা জানান, ওই সমস্যা মেটাতে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে স্টেশনের পাশ দিয়ে একটি বিকল্প রাস্তা তৈরির জন্য তাঁরা চেষ্টা করছিলেন। একই সঙ্গে চাষিদের তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ঘুরপথে যদি বাজার থেকে ফুল স্টেশনে আনতে হয় তা হলে চাষিদের পরিবহণ খরচ বাবদ টাকা সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হবে। পরে স্টেশনের পাশ দিয়ে রাস্তা হলে সেই ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু দু’টি চেষ্টার কোনওটিই ফলপ্রসূ হয়নি। পর্ষদের এক কর্তা জানান, যে জমির উপর দিয়ে রাস্তা হওয়ার কথা তার উপরে বেশ কিছু জবরদখলকারী আছেন। তাঁদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সরাতে কেউ উদ্যোগী হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy