পায়ে-পায়ে: প্ল্যাকার্ড হাতে ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র
চণ্ডীতলা-১-এর পর এ বার জাঙ্গিপাড়া।
হুগলি জেলা চাইল্ড লাইনের ‘দোস্তি’ সপ্তাহ উপলক্ষে সম্প্রতি কন্যাশ্রী ক্লাবের শরিক হল জাঙ্গিপাড়া।
প্রকল্প উদযাপন শুরু হয়েছিল জাঙ্গিপাড়া থানার সামনে থেকে বিডিও দফতর পর্যন্ত বাল্য বিবাহ রোধের ডাক দিয়ে মিছিলের মাধ্যমে। মিছিলে ছিলেন বিডিও জামিল আখতার-সহ পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ব্লকের আশাকর্মীরাও মিছিলে সামিল হন। ছাত্রীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। ব্লক অফিসের অডিটোরিয়ামে বাল্য বিবাহ নিয়ে সেমিনার হয়। আর সেখানেই কন্যাশ্রী ক্লাবের উদ্বোধন করা হয়।
বিডিও জামিল আখতার বলেন, ‘‘আপাতত ৭টি বিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রীকে নিয়ে ক্লাব খোলা হল। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে।’’
প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, বাল্য বিবাহ, নির্যাতন, পণপ্রথার মতো বিষয় অনেক সময় নজরে আসে না। কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যরা এই সব বিষয় তাঁদের জানাতে পারবে। সেই মতো দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চলতি মাসে এই ব্লকে ন’জন নাবালিকার বিয়ের চেষ্টা রোখা গিয়েছে। বিভিন্ন সচেতনতা অনুষ্ঠান সত্ত্বেও এক শ্রেণির অভিভাবক কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার ক্ষতিকর দিকটা বুঝতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের উপর নির্যাতনের ঘটনাও ঘটছে। কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদের মাধ্যমে সহপাঠীদের মধ্যে এই নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।
‘দোস্তি’ সপ্তাহের প্রথম দিন, ১৪ নভেম্বর লুই ব্রেইল মেমোরিয়াল স্কুলে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিশুদিবস পালিত হয়। কেক কাটা হয়। শিশুরা আবৃত্তি, নাচ, গান পরিবেশন করে। পরের দিন তারকেশ্বর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম-শিশুদের নিয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান হয়।
নির্যাতন থেকে কী করে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে, আঠার নেশার ক্ষতিকর দিক এবং তা থেকে কী ভাবে দূরে থাকতে হবে, তা নিয়ে ছোটদের বোঝানো হয়। হুগলি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় শিশুমন-বিষয়ক সিনেমা দেখানো হয়। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জিআরপি এবং আরপিএফের আধিকারিকরা।
পান্ডুয়ায় বিএড কলেজে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনাচক্রের আয়োজন হয়েছিল। আলোচনার বিষয় ছিল ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের উপর নির্যাতন রোধ’। প্রচারে চন্দননগরের প্রবর্তক হোমের ছেলেদের নিয়ে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হয়। গোঘাট-২ সিডিপিও (চাইল্ড ডেভলপমেন্ট প্রোজেক্ট অফিসার) দফতরে ‘দত্তক নেওয়ার পদ্ধতি’ নিয়ে আলোচনা হয়। ছিলেন প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা এবং শতাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আলোচনায় হাজির ছিলেন।
হুগলি চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর গোপীবল্লভ শ্যামল বলেন, ‘‘এক জন নাবালকও যেন অবহেলা বা নির্যাতনের শিকার না হয়, তা নিয়ে সার্বিক সচেতনতা দরকার। বিষয়টি মাথায় রেখেই দোস্তি সপ্তাহে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy