Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ
Indian Railways

গোঘাটে জট আরও বাড়ল

জমি অধিগ্রহণ হলেও, একজনও চেক নেননি। জমি রেলকে হস্তান্তরও করা যায়নি।

পশ্চিম অমরপুরে এই জমিতেই রেললাইন বসার কথা। মাটি ফেলার কাজ থমকে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ.

পশ্চিম অমরপুরে এই জমিতেই রেললাইন বসার কথা। মাটি ফেলার কাজ থমকে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ.

পীযূষ নন্দী
গোঘাট শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০২:১৬
Share: Save:

তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণে ভাবাদিঘি-জট কাটেনি। সেখানে থেকে সাত কিলোমিটার তফাতে গোঘাটেরই পশ্চিম অমরপুরেও সমস্যা রয়েছে। তা মেটার আগেই পরিস্থিতি জটিল হল। রেলপথ নির্মাণের আগে এলাকায় একটি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র গড়ারও দাবি তুললেন গ্রামবাসী।

গোঘাট-১ ব্লকের ভাবাদিঘিতে ‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র আন্দোলন চলছে বছর ছয়েক ধরে। বর্তমানে বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারাধীন। গোঘাট-২ ব্লকের পশ্চিম অমরপুরে ‘রেল চালাও, গ্রাম বাঁচাও’ কমিটিও আন্দোলন করছে ২০১০ সাল থেকে। তাদের দাবি ছিল, জমির ন্যায্য দাম এবং নিকাশি ব্যবস্থার। তার সঙ্গে আরও একটি দাবি যুক্ত হল। কমিটির সম্পাদক ফটিক কাইতি বলেন, “রেলপথে বাধা হবে এ রকম অনেকগুলি মৌজার জল নিকাশির জন্য আমাদের সেতুর দাবি আছেই। জমির দাম নিয়ে সমস্যা হয়তো মিটে যাবে। তবে হলদি পোলের দক্ষিণে প্রফুল্লচন্দ্র সেনের রেখে যাওয়া ট্রাস্টের ৪৫ বিঘা জমির মধ্যে ১২ বিঘা জমি রেলপথের জন্য চলে যাচ্ছে। সেই দাম ট্রাস্টের প্রয়োজন নেই। বাদবাকি যা জমি থাকছে, সেখানে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র করার কথা বলেছি আমরা।”

এ নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) নিখিলেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘জমি অধিগ্রহণের কাজ অনেকটা এগিয়েছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। চাষিদের দাবি অনুযায়ী আমরা বাড়তি কিছু টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার জন্য রেলকে চিঠি করেছি। সেটা দিলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করতে পারব। আন্ডারপাস করে জল নিকাশির দাবি নিয়েও রেল দফতর অরাজি হয়নি। কৃষি গবেষণা কেন্দ্র গড়ার বিষয়টা নতুন শুনছি। আলোচনা চলবে।” পূর্ব রেল জানিয়েছে, রাজ্য সরকার স্থানীয় সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। সমস্যা মিটলে তবেই কাজ শুরু হবে।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম অমরপুরে জমির দাম নিয়ে চাষিদের আপত্তি রয়েছে। তা ছাড়া, বন্যার জল নিকাশির ব্যবস্থার দাবিতে অন্তত এক কিলোমিটার পথের পুরোটাই সেতু করার দাবি রয়েছে তাঁদের। সেই নিশ্চয়তা না-মেলায় জমি অধিগ্রহণ হলেও, একজনও চেক নেননি। জমি রেলকে হস্তান্তরও করা যায়নি।

কমিটির বক্তব্য, পশ্চিম অমরপুর এবং সংলগ্ন পুরো এলাকা সমতল থেকে অন্তত পাঁচ ফুট নীচু। ওইসব মৌজার অধিগৃহীত জমির উপর উঁচু বাঁধ বেঁধে রেললাইন করলে পশ্চিম অমরপুর গ্রাম-সহ তাজপুর, আনুড়, হরিশোভা, দেবখণ্ডের মতো ১০-১২টি গ্রাম বর্ষা ও বন্যার প্লাবতি হবে। জল নিকাশি হবে না। নিকাশির সুব্যবস্থা না করে রেলপথ নির্মাণে তাই আপত্তি জানানো হয়েছে।

পূর্ব রেল এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অমরপুর মৌজার প্রায় ১৮০ জন চাষির ১৩.১০০০ একর জমি রয়েছে রেলের প্রস্তাবিত পথে। অধিকাংশই তিন ফসলি জমি। ২০১০-এর শুনানিতে জমির মূল্য ধার্য হয় কাঠাপিছু ১৪ হাজার ৬৫০ হাজার টাকা। অমরপুরের চাষিরা জমির ‘ন্যায্য’ দামের দাবিতে ওই বছরের জুনে ‘রেল চালাও, গ্রাম বাঁচাও’ কমিটি গঠন করেন। জমির দাম কাঠাপিছু ন্যূনতম ৭৫ হাজার টাকা করে দাবি করেন। তাঁদের ব্লক অফিসে ডেকে কয়েক দফা শুনানির পর ২০১৭ সাল নাগাদ দাম কিছু বেশি দেওয়া নিয়ে রফা হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways Goghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE