Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Howrah

হাওড়ায় মর্গে জমছে দেহ, গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

চুক্তি অনুযায়ী, ৪০টি দেহ জমে গেলেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা অতিরিক্ত দেহগুলি দাহ করার ব্যবস্থা করে। সৎকারের সেই কাজের টাকা দেয় পুরসভা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৩২
Share: Save:

এক দিকে খারাপ হয়ে গিয়েছে চারটির মধ্যে তিনটি ফ্রিজ়ার। তার উপরে শতাধিক বেওয়ারিশ দেহ জমে গিয়েছে গত কয়েক মাসে। যার জেরে হাওড়ার মর্গ থেকে বেরোনো ভয়াবহ দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগ, পুরসভা ঠিকাদারদের বকেয়া টাকা না মেটানোয় বেওয়ারিশ দেহগুলি দাহ করা হচ্ছে না। ফলে জমে থাকা দেহের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।

জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, গত অক্টোবর থেকেই বেওয়ারিশ দেহের সৎকারের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। ঠিকাদারদের বকেয়া টাকা না মেটানোর ফলেই এমন অবস্থা। তাঁরা জানিয়েছেন, বছর কয়েক আগে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে সাজানো হয়েছিল হাওড়ার মর্গ। সেখানে ৪০টি বেওয়ারিশ দেহ রাখার মতো ফ্রিজ়ার তৈরি করা হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, ৪০টি দেহ জমে গেলেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা অতিরিক্ত দেহগুলি দাহ করার ব্যবস্থা করে। সৎকারের সেই কাজের টাকা দেয় পুরসভা। প্রতি মাসেই বেওয়ারিশ দেহগুলিকে একসঙ্গে তুলে নিয়ে গিয়ে শিবপুর শ্মশানে দাহ করা হত। ঠিকাদারদের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে সৎকার বাবদ প্রাপ্য টাকা তাঁরা পাননি। তাই অক্টোবর থেকে বেওয়ারিশ দেহের দাহকাজ বন্ধ রেখেছেন তাঁরা।

হাওড়ার মল্লিকফটকে ওই মর্গটি রয়েছে হাওড়া জেলের পাশে, পি কে ব্যানার্জি রোড ও জিটি রোডের পাশে ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা মল্লিকা রায় বললেন, ‘‘পচা মৃতদেহের ভয়াবহ গন্ধে বাড়িতে টেকাই দায় হয়ে উঠেছে। আমরা অসুস্থ বোধ করছি।’’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাত বাড়লেই দুর্গন্ধ বাড়তে থাকে। মল্লিকফটক থেকে সন্ধ্যাবাজার পর্যন্ত অংশে জিটি রোড ধরে যাওয়ার সময়ে মানুষকে মুখে রুমাল দিয়ে যেতে হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে করোনার এই পরিস্থিতিতে অনেক ঠিকাদার সংস্থাই উপযুক্ত পারিশ্রমিক ছাড়া কাজ করতে চাইছে না। অনেক ক্ষেত্রে পিপিই কিট কেনার টাকাও পাচ্ছে না তারা।

এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেশ রাই বলেন, ‘‘পচা দেহের গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ। ২০১৫ সালে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন মর্গ তৈরি করা হয়। কিন্তু সেখানে ফ্রিজ়ারগুলির ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। আগামী সাত দিনের মধ্যে পচা দেহের সৎকার না হলে আমরা পুরসভাকে বলব অন্য ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করতে।’’

হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘ঠিকাদার সংস্থার টাকা নিয়মিত ভাবেই মেটানো হয়। কিন্তু এর মধ্যে কোনও সমস্যা হয়ে থাকলেও আমাদের তা জানানো হয়নি। খুব দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mortuary Morgue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE