অভিযুক্ত রাজু সাউ (উপরে) প্রভু চৌধুরী (মাঝে) বাবন যাদব (নীচে)। নিজস্ব চিত্র
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের হাত থেকে মনোজ উপাধ্যায় খুনের তদন্তভার নিয়েই সাফল্য পেল সিআইডি। ধরা পড়লেন মূল অভিযুক্ত, ভদ্রেশ্বরের নির্দল কাউন্সিলর রাজু সাউ।
ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান মনোজ খুনের পরেই তাঁর দাদা অনিল উপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছিলেন, রাজুই এই হত্যাকাণ্ডের মাথা। রবিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের একটি হোটেল থেকে রাজু ও তাঁর দুই সঙ্গী প্রভু চৌধুরী এবং বাবন যাদব গ্রেফতার হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে অনিলবাবু। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই বলছি, রাজুই এই হত্যকাণ্ডের মাথা। ঠিক কী কারণে ওরা আমার ভাইকে খুন করল, এ বার দ্রুত সেই রহস্য উদ্ঘাটন করা হোক। দোষীদের কঠিন শাস্তি চাই।’’
কিছুদিন আগেই এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার চেয়ে চন্দননগর আদালতের এসিজেএম জয়শঙ্কর রায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছিল সিআইডি। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়। রবিবারই ভদ্রেশ্বর থানার এই মামলার তদন্তকারী অফিসার অমর মণ্ডল সিআইডি-কে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেন। আর ওই রাতেই সিআইডি-র একটি দলের ফিরোজাবাদের ওই হোটেলে হানা। ধৃতদের সোমবার ওই রাজ্যের আদালতে হাজির করানো হয়। তাদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হবে বলে সিআইডি সূত্রের খবর। এই নিয়ে মনোজ-হত্যাকাণ্ডে মোট ১২ জন গ্রেফতার হল।
গত ২১ নভেম্বর রাতে ভদ্রেশ্বরের গেটবাজারে বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন মনোজ। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে মনোজকে পর পর ছ’টি গুলি করা হয়। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির এমন এক নেতা খুন হওয়ায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে রাত থেকেই পথে নামেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তার জেরে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটেও রদবদল হয়। খুনের পর পরই এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অজয় কুমার নতুন পুলিশ কমিশনার হওয়ার পরে বারাণসীর একটি লজ থেকে সাত দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। তার পরে ধরা পড়ে আরও এক জন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাণসীতে সিআইডি-র একটি দলও ছিল। রবিবার রাতে সেই দলটিই ফিরোজাবাদের হোটেল চিহ্নিত করে রাজু ও তাঁর দুই সঙ্গীকে ধরে। খুনের পরে রাজু, বাবন ও প্রভু প্রথমে বিহারের সিওয়ানে গা ঢাকা দেয়। সেখানে বাবনের এক আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে। পরে সেখান থেকে তারা ফিরোজাবাদ রওনা হয়। রাজুকে জেরা করেই হত্যা-রহস্যের কিনারা করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছিল, বেশ কয়েক বছর আগে রাজুর এক আত্মীয় খুনের ঘটনায় মনোজর নাম জড়িয়েছিল। তা ছাড়া, বর্তমানে শহরের খাটাল উচ্ছেদ করা নিয়ে মনোজের কড়া অবস্থান রাজু মেনে নিতে পারেননি। এখন ঠিক কী কারণে মনোজকে খুন করা হয়, সেই উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছেন সকলে।
ইতিমধ্যেই সিঙ্গুরের একটি কলাবাগান থেকে খুনে ব্যবহৃত পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে রয়েছে দু’টি সেভেন এমএম রিভলভার। সিঙ্গুর থেকে মেলে সেই রাতে দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করা দু’টি স্কুটারও। কিন্তু অস্ত্রের জোগান দুষ্কৃতীদের কে দিয়েছে, এখনও তার উত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy