আবর্জনা: অপরিচ্ছন্ন পরিবেশই মশার আঁতুরঘর। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
এখনও শীত পুরোপুরি যায়নি। তাতেই চব্বিশ ঘণ্টা মশা মারার ধূপ বা তেল পোড়াতে হচ্ছে। তবু রেহাই মিলছে না।
মশার দাপট নিয়ে তিতিবিরক্ত আরামবাগ শহর। পুরভোটের মুখে বাসিন্দারা সতর্ক করেছেন, আরামবাগের মশারা কিন্তু হেলাফেলার বিষয় নয়। অনেক হিসেব বদলে দিতে পারে!
মশা মোকাবিলায় পুরসভার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অনেক। ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধীমান পাল নামে এক ব্যবসায়ীর ক্ষোভ, ‘‘সারা বছর মশার হাত থেকে রেহাই মেলে না। মশার ধূপ ও তেল পুড়িয়েও সামলানো যাচ্ছে না। পুরসভা থেকে মশা মারার তেল কিংবা কেরোসিন ছড়ানো হয়নি বললেই চলে।” ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রমেন ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “মশা দমন নিয়ে পুরসভা একেবারেই উদাসীন। মশার কামড়ে জ্বর লেগেই আছে। পাড়ায় এঁদো পুকুরগুলো পানায় ভর্তি হয়ে মশার আঁতুড়ঘর হয়ে গিয়েছে। সেগুলি সংস্কার নিয়েও কোনও উচ্চবাচ্য করছে না পুরসভা।” ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গৃহবধূ মধুমিতা রাণা বলেন, “মশা-মাছি, আবর্জনায় ছয়লাপ এখানকার পুর-পরিবেশ। জ্বর-জ্বালায় ভুগতে হচ্ছে। ভোটে মশারা কিন্তু হেলাফেলার বিষয় নয়।”
এমন অনেক অভিযোগ শহরে কান পাতলেই শোনা যায়। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া নিয়ে আতঙ্কে থাকেন ১৯টি ওয়ার্ডের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। মশাবাহিত রোগ নিয়ে উদ্বেগে থাকে স্বাস্থ্য দফতরও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই পুর এলাকায় মশাবাহিত ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার নজির প্রতি বছরই থাকে। নিয়মিত ৬ থেকে ৮ জন রোগী জ্বর নিয়ে মহকুমা হাসাপাতালে ভর্তি হন। বছরে গড়ে ৬০-৮০ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রনাত হন। ডেঙ্গি ‘পজেটিভ’ থাকে গড়ে ১০- ১৫ জনের।
কী করছে পুরসভা?
পুরকর্তারা মানছেন, মশার উপদ্রব ঠেকাতে তাঁরা দিশেহারা। ওষুধ ছড়ানোর পাশাপাশি প্রতি বছর একাধিকবার মশাবাহিত রোগ এবং মশা মারার নানা কৌশল নিয়ে শহরের রবীন্দ্রভবনে বৈঠক হয়। প্রতি ওয়ার্ডে মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হয়। মশার লার্ভা খেয়ে ধ্বংস করার জন্য নিকাশি নালাগুলিতে গাপ্পি মাছও ছাড়া হয়। তবু মশা ঠেকানো
যায় না।
আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, “সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। কিন্তু শহরে মশা নিয়ন্ত্রণ দুষ্কর হয়ে উঠেছে। গ্রামঘেরা শহরটির নিকাশি পরিকাঠামো অগোছালো। ওষুধ ছড়িয়ে এবং কামান দেগে আজ মশা মারছি তো পরের দিনই গ্রাম থেকে মশার ঝাঁক চলে আসছে। কী যে করি!”
শহরবাসী মনে করছেন, পুরসভার সদিচ্ছা থাকলে সমস্যা অন্তত কিছুটা কমানো যেত। কিন্তু তা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy