নন্দিনী ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
পরীক্ষায় ভাল ফল করতে হলে গৃহশিক্ষক ছাড়া চলে না! কোনও ছেলে বা মেয়ে মাধ্যমিকে মারকাটারি নম্বর পেয়েছে, অথচ তার গৃহশিক্ষক নেই, এমনটা মেলা ভার। অথচ, শ্রীরামপুরের নেহরুনগর কলোনির নন্দিনী ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রে এটাই সত্যি।
মাহেশ পরমেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিয়ে নন্দিনী পেয়েছে ৬১১। জীবনবিজ্ঞানে ৯৯, ভৌতবিজ্ঞানে ৯০। বাবা-মায়ের আয় তেমন জোরালো নয়। বাবা সুতোর ব্যবসা করেন। মা কলকাতায় একটি ক্লিনিকে সামান্য কাজ করেন। নন্দিনীর কথায়, ‘‘মূলত পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণেই গৃহশিক্ষক ছিল না আমার। স্কুলের শিক্ষিকাদের পড়ানোই মন দিয়ে শুনেছি।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিঠু মৈত্র বলেন, ‘‘পড়াশোনার প্রতি একাগ্রতাই নন্দিনীকে সফল করেছে। স্কুলে মন দিয়ে পড়াশোনা করলে গৃহশিক্ষক ছাড়াও যে সফল হওয়া যায়, ওর মাধ্যমিকের ফল সেটাই প্রমাণ করল।’’
প্রথম শ্রেণি থেকে এলাকারই একটি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছে নন্দিনী। পঞ্চম শ্রেণি থেকে মাহেশ পরমেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির পরীক্ষায় সে দ্বিতীয় হয়েছিল। তার পর থেকে প্রথম। মাধ্যমিকের ফলেও সে স্কুলের সেরা। এ বার বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় সপ্রতিভ মেয়েটি। দু’চোখে স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। গরিবদের সেবা করার। তবে, বাবা-মায়ের পক্ষে সেই খরচ চালানো কতটা সম্ভব, সেই চিন্তাই কুড়ে কুড়ে খায় নন্দিনীকে। সে বলে, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য গৃহশিক্ষক অবশ্যই দরকার। বাবা-মা সেই চেষ্টা করছেনও। কিন্তু অত খরচ চালানো যে বাবার পক্ষে কার্যত অসম্ভব!’’ স্কুলের শিক্ষিকারা অবশ্য আশা করছেন, যাবতীয় বাধা ঠেলে সঠিক পথেই এগিয়ে যাবে তাঁদের প্রিয় ছাত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy