Advertisement
১১ নভেম্বর ২০২৪
arambag

বাঁশ দিয়ে মার তৃণমূল নেতাদের

আহত তৃণমূল নেতা রাজকুমার বাগ, অশোক ধাড়া এবং বংশী পোড়েলকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির দাবি, জনরোষের শিকার হয়েছেন শাসকদলের ওই তিন নেতা।

হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আহতদের। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আহতদের। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০৬
Share: Save:

অশান্তির আবহ ছিলই। থমকে থাকা একশো দিনের কাজ শুরু হতেই বেরিয়ে এল লাঠি-সোঁটা।
ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়িয়েছে আরামবাগে। এ বার ঘটনাস্থল মলয়পুর ১ পঞ্চায়েতের ঘরগোয়াল। তৃণমূলের অভিযোগ, শুক্রবার সকালে সেখানে একশো দিনের কাজ শুরু করাতে গেলে দলের তিন নেতাকে লাঠিপেটা করে বিজেপি কর্মীরা। আহত তৃণমূল নেতা রাজকুমার বাগ, অশোক ধাড়া এবং বংশী পোড়েলকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির দাবি, জনরোষের শিকার হয়েছেন শাসকদলের ওই তিন নেতা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় আট জনের নামে লিখিত অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ তাদের খুঁজছে।
কী ঘটেছিল এ দিন?
রাজকুমারের অভিযোগ, “সকালে সাড়ে ৬টা নাগাদ গ্রাম সংলগ্ন একটি খালের পানা পরিষ্কারের কাজ শুরু করতে গিয়েছিলাম কয়েকজন শ্রমিককে নিয়ে। আচমকাই ‘কাজ করানো চলবে না’ বলে বিজেপি নেতা সুভাষ সাঁতরার নেতৃত্বে ওদের দলের কর্মীরা লাঠি ও বাঁশ নিয়ে আমাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাথায় ও কোমরে আঘাত করে।’’ এর পরেই কাজ বন্ধ করে কোনওরকমে পালিয়ে বাঁচেন ওই তিন জন।
লোকসভা ভোটের পরে আরামবাগে বিজেপির উত্থান হয়। পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। দাবি তোলেন, তৃণমূলের সুপারভাইজারদের বরখাস্ত করে বিজেপির লোকদের ওই কাজে নিয়োগ করতে হবে। একশো দিনের কাজের সুপারভাইজার-দের অধিকাংশই স্থানীয় তৃণমূল নেতা কিংবা শাসকদলের সক্রিয় কর্মী। প্রশাসন সূত্রে খবর, এলাকায় গোলমাল শুরু হলে অনেক সুপারভাইজার (তৃণমূলের স্থানীয় নেতা) কাজে আসা বন্ধ করে দেন। কেউ কেউ কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ফলে, বন্ধ হয়ে যায় একশো দিনের কাজ।
জেলা এবং ব্লক প্রশাসন দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে কাজ শুরুর নির্দেশ দেন। অনেক জায়গাতেই বিজেপি কর্মীরা কাজের তদারকি শুরু করেন। মলয়পুর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের দীপালি সাহার অভিযোগ, “লোকসভা ভোটের পর থেকে বিজেপি অবৈধ ভাবে এলাকায় ১০০ দিনের কাজের তদারকি করছিল। গত দু’মাস ধরে আমাদের ছেলেরা কাজ করাতে গিয়ে বাধা পায়। তখন থেকেই অশান্তি চলছিল। দু’মাস কোনও কাজ হয়নি। এ দিন কাজ শুরু করতে গেলে ওরা আমাদের ছেলেদের মারধর করে। কাজে বাধা দেয়। বিষয়টি ব্লক প্রশাসনে জানানো হবে।”
এ দিন হাসপাতালে দলের আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা, দলের ব্লক সভাপতি কমল কুশারী এবং পঞ্চায়েত প্রধান। বিধায়কের অভিযোগ, “বিজেপি’র ছেলেরা একশো দিনের কাজ বন্ধ রেখেছিল। আমাদের ছেলেরা এ দিন কাজ করাতে গেলে তাঁদের মারধর করেছে ওরা। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।”
এ দিকে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা সুভাষের দাবি, তিনি ওই সময় ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। মারধরে অভিযুক্ত অন্য বিজেপি কর্মীদের বক্তব্য, শ্রমিকদের মধ্যে গোলমালের ঘটনায় ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের নাম জড়ানো হয়েছে।
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের অভিযোগ, “তৃণমূল একশো দিনের কাজে প্রচুর দুর্নীতি করেছে। মাস্টার রোলে ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে টাকা লুট করেছে। এ দিন জনরোষের শিকার হয়েছেন ওই তিন জন। পরিকল্পিত ভাবে আমাদের ছেলেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।”

অন্য বিষয়গুলি:

Arambag Hooghly Political Clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE