Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

গরমিল দূর করে নয়া কর বসবে বালিতে

প্রায় দশ বছর পরে বালি এলাকায় সম্পত্তির পুনর্মূল্যায়নের কাজে হাত দিয়েই কার্যত চোখ কপালে উঠেছে হাওড়া পুরসভার কর্তাদের! তাঁদের দাবি, বিগত বছরগুলিতে বালি-বেলুড়-লিলুয়া অঞ্চল জুড়ে যে পরিমাণ সম্পত্তিকর আদায় হওয়ার কথা, তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ পাওয়া যেত।

শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০০:৫৪
Share: Save:

প্রায় দশ বছর পরে বালি এলাকায় সম্পত্তির পুনর্মূল্যায়নের কাজে হাত দিয়েই কার্যত চোখ কপালে উঠেছে হাওড়া পুরসভার কর্তাদের!

তাঁদের দাবি, বিগত বছরগুলিতে বালি-বেলুড়-লিলুয়া অঞ্চল জুড়ে যে পরিমাণ সম্পত্তিকর আদায় হওয়ার কথা, তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ পাওয়া যেত। ২০১৬-’১৭ আর্থিক বছরে বালিতে সম্পত্তিকর আদায় হয়েছে প্রায় তিন কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। কর্তাদের দাবি, সঠিক মাপজোক করে সম্পত্তির কর নেওয়া হলে ওই অঙ্কটি হত বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

সম্পত্তিকরের পরিমাণ কম হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে পুরকর্তারা দেখেছেন, অনেক জায়গায় গরমিল রয়েছে। যেমন, পুর নথিতে যে এলাকা পুকুর হিসেবে চিহ্নিত, সেখানেই আবাসন গড়ে উঠেছে। ফলে ওই আবাসনের বাসিন্দাদের কোনও করই দিতে হয়নি। আবার কোথাও চারতলা বাড়ি থাকলেও পুর নথিতে তা ফাঁকা জমি। তাই তার করও বছরে ৩০-৪০ টাকা। এ ছাড়াও উপরে ১২ বছর আগে বালিতে সম্পত্তির পুনর্মূল্যায়নের কাজ শুরু হলেও তা শেষ হয়নি।

এই তথ্য সামনে আসার পরেই ঠিক সম্পত্তিকর আদায় করতে বালির ১৬টি ওয়ার্ডে সম্পত্তির পুনর্মূল্যায়ন (জেনারেল রিভিশন বা জি আর) করার প্রাথমিক পর্যায়ে বাড়ি, জমি, কারখানার মাপজোক শুরু করেছে হাওড়া পুরসভা। মেয়র পারিষদ (সমীক্ষা ও মূল্যায়ন) শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিগত দিনে বালিতে সম্পত্তি করে পুকুর চুরি হয়েছে। ফলে প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব লোকসান হয়েছে।’’

পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আশা করি, আগামী জুলাই থেকে ‘জি আর’ শুরু করা যাবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা শেষ করারও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এর জন্য অত্যধিক কর বেড়ে যাবে, এমন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই।’’ তিনি জানান, হাওড়ার অন্যান্য ওয়ার্ডের মতোই বালিতে নতুন কর ধার্য হবে।

শান্তনুবাবু জানান, হাওড়ার মতো বালিতেও এক হাজার বর্গফুটের পাকা বাড়িতে বছরে ১৮১৬ টাকা এবং টিন, টালি, অ্যাসবেস্টসের বাড়িতে বছরে ৩৬৩ টাকা কর ধার্য হবে। কোনও ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন, সরকার অনুমোদিত গ্রন্থাগার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি বাণিজ্যিক কাজে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার না করে, তা হলে তাদের কর মকুব হবে। হাওড়ার মতো বালিতেও বাসিন্দারা করের নোটিসের সঙ্গে নতুন করে ধার্য হওয়া করের বিষয়ে আপত্তি জানানোর জন্য ফর্ম পাবেন। তা জমা দেওয়ার পরে পুর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাওড়া ও বালি আলাদা নয়। তাই করেও বিভাজন থাকা ঠিক নয়। কাউকে সুবিধা পাইয়ে দিতে বালিতে কর নিয়েও রাজনীতি হয়েছে। এখন সঠিক কর ধার্য করে তা থেকে যা আয় হবে, সেই টাকা উন্নয়নে খরচ হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE