সূত্র বলতে একটা চিরকুটে লেখা ফোন নম্বর। আর সেই সূত্র ধরে প্রায় পঁচিশ দিন আগে এক যুবক খুনে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন আবার নিহতের আত্মীয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে বৈদ্যবাটির দীর্ঘাঙ্গি মোড়ের কাছে দিল্লি রোডের ধারে বছর পঁয়ত্রিশের অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক ভাবে দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও মৃতদেহের হাতে, মাথায় আঘাতের পাশাপাশি গলায় কাটা দাগ দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। স্বতঃপ্রণোদিত খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ।
পরে নিহতের পকেটে থাকা চিরকুটের মেলে একটি ফোন নম্বর। সেই ফোনের টাওয়ার লোকেশন থেকে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে ডোমজুড়, কোনা, লিলুয়া, বেলুড়— এই সব এলাকায় ফোনটি ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর শ্রীরামপুর থানার পুলিশ ওই সব থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। জানা যায়, নিহত গোপাল মণ্ডল নামে ওই যুবক লিলুয়ার ভট্টনগরের ঘুঘুপাড়ার বাসিন্দা। তিনি গাড়িতে সিমেন্ট তোলা-নামানোর কাজ করতেন।
তারপরও খুনির সন্ধান মিলছিল না কিছুতেই। শেষে গোপালের স্ত্রীর মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটে দেখা যায়, তিনি একটি ফোন নম্বরে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। নম্বরটি আদতে গোপালের ভগ্নিপতি, সালকিয়ার বাসিন্দা উত্তম কর্মকারের। এরপরই জানা যায়, গোপালের স্ত্রীর সঙ্গে উত্তমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হলেও উত্তম মেটাতে আসত। এমনকী সে বহুবার টাকা দিয়ে সাহায্যও করেছে তাঁদের।
এরপর উত্তমকে আটক করে শুরু হয় দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। জেরার মুখে সে খুনের কথা স্বীকার করে জানায়, সুব্রত রায় নামে এক যুবককে সে ঘটনার দিন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল। একটি ছোট ট্রাক ভাড়া করে তারা গোপালকে এক জায়গায় কাজে যাওয়ার জন্য বলে। গোপাল গাড়ি নিয়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে আসতেই গাড়ি দাঁড় করায় উত্তম। তারপর উত্তম ধার দেওয়া টাকা শোধ করার জন্য গোপালকে জোর করে বলে অভিযোগ।
এর মাঝে সুব্রত লোহার কিছু দিয়ে গোপালের মাথায় আঘাত করে। উত্তম আর সুব্রত মিলে গাড়িতে তোলে গোপালকে। ছুরি দিয়ে শ্যালকের নলি কেটে দেয় উত্তম। ট্রাকের চালককে ছুরি দেখিয়ে গাড়িতেই দেহ নিয়ে গিয়ে দিল্লি রোডের ধারে ফেলে চম্পট দেয় তারা। উত্তম এবং সুব্রতকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তারা পুলিশ হেফাজতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy