বাপি চৌধুরী
এক মহিলার বদনাম করতেই ফেসবুক-কাণ্ড। বুধবার রাতে শ্রীরামপুরের নন্দীমাঠ এলাকার বাসিন্দা, বছর চল্লিশের বাপি চৌধুরীকে গ্রেফতারের পরে এমনই দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত এপ্রিল মাসে বাপি এক মহিলার নামে ওই অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। তবে দিন কয়েক ধরে ওই অ্যাকাউন্ট নিয়ে তোলপাড় হচ্ছিল শহর। যেখানে শহরের অনেক মহিলার অসতর্ক অবস্থার ছবি ‘পোস্ট’ করা হয়েছে। যে মহিলার নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়, কয়েক মাস আগে কোনও ভাবে বাপি তাঁর ফোন নম্বর পায়। সে ফোনে ওই মহিলাকে বিরক্ত করতে থাকে। বন্ধুত্বের আহ্বান জানায়। কিন্তু মহিলা রাজি হননি। বিরক্ত হয়ে তিনি ফোন নম্বর বদলে ফেলেন।
তদন্তকারী অফিসারদের বক্তব্য, এর পরেই বাপি মহিলার নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার ফন্দি করে, যাতে তাঁর বদনাম হয়। বাপির ধারণা ছিল, মহিলাই ওই অ্যাকাউন্ট খুলেছেন ভেবে পুলিশ তাঁর বাড়িতে যাবে। তাতে সামাজিক ভাবে তিনি আরও হেনস্থা হবেন। এ সব কথাই জেরায় স্বীকার করেছে ধৃত। তাকে দফায় দফায় জেরা করেছেন শ্রীরামপুরের এসডিপিও কামনাশিস সেন এবং আইসি নন্দদুলাল ঘোষ।
বাপির শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মীরা। ধৃতকে এ দিন শ্রীরামপুরের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম স্বরূপ চক্রবর্তীর এজলাসে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাপির পক্ষে কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি।
শ্রীরামপুর বার লাইব্রেরির সদস্য, আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মা-বোনেদের সম্মান নষ্ট করেছেন ওই যুবক। এক মহিলা আইনজীবী এবং বিচারপ্রার্থী মহিলাদের ছবিও ওই অ্যাকাউন্টে রয়েছে। তাই বার লাইব্রেরির তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কোনও আইনজীবী তার হয়ে দাঁড়াবেন না।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাপি শ্রীরামপুরের এক কেব্ল অপারেটর অফিসের কর্মী। সে বিবাহিত। শহরের নন্দীমাঠ এলাকায় ফ্ল্যাটে থাকে। বাড়ি রয়েছে শহরের তারাপুকুর এলাকায়। দু’দশক আগে সেখানে একটি খুনের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল। ইদানীং পথেঘাটে, দোকানে, রেলের কামরায়, প্ল্যাটফর্মে, ব্যাঙ্কে মহিলাদের বিভিন্ন ভঙ্গির ছবি তোলা বাপির অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। বাপির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি ধারা-সহ মোট দু’টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। জেলা পুলিশ ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই প্রোফাইল বন্ধ করে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy