Advertisement
১৮ মে ২০২৪

জ্বালার পাউডার কেপমারিতে, উদ্ধার হল টাকা

গত ২০ জুলাই বেলুড় মঠ বাস স্টপের কাছে স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে বেরোনোর সময়ে এই কেপমারির শিকার হয়েছিলেন প্রৌঢ়। এক ট্রাফিক অফিসার সঙ্গে সঙ্গে ধাওয়া করে এক কেপমারকে ধরলেও টাকা উদ্ধার হয়নি সে দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৩
Share: Save:

সত্যি শুঁয়োপোকা নয়। তবে শুঁয়োপোকা শরীরে লাগলে যেমন জ্বালা ও চুলকানি হয়, তেমনই প্রতিক্রিয়া হওয়ার এক ধরনের বিশেষ পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল বালির বাসিন্দা ভূপেন্দ্রচন্দ্র পাল রায়ের ঘাড়ে। তাতে ছটফট শুরু করেন প্রৌঢ়। আর সেই সুযোগেই তাঁর ব্যাগ খুলে ১৬ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় কেপমার। ধৃত কেপমার জেরায় এমনটাই কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি। তার দেখানো আস্তানা থেকে উদ্ধার হয়েছে খোয়া যাওয়া টাকাও।

গত ২০ জুলাই বেলুড় মঠ বাস স্টপের কাছে স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে বেরোনোর সময়ে এই কেপমারির শিকার হয়েছিলেন প্রৌঢ়। এক ট্রাফিক অফিসার সঙ্গে সঙ্গে ধাওয়া করে এক কেপমারকে ধরলেও টাকা উদ্ধার হয়নি সে দিন। ধৃত গণেশ প্রসাদকে বারবার জেরা করে শেষমেশ শনিবার রাতে হালিশহর থেকে খোয়া যাওয়া টাকা ও কাগজপত্র উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, গণেশকে ধরে আনার পরে পুরনো নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৩ সালে বালি জিটি রোডের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কেপমারির ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজে তার ছবি রয়েছে।

তবে জেরায় প্রথম থেকেই ওই ব্যক্তি ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল বলে দাবি করেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সে প্রথমে পুলিশকে জানিয়েছিল, ব্যান্ডেলে থাকে। সেখানকার কুলিপাড়া, দক্ষিণ ভারতীয় বাসিন্দাদের পাড়া চষে ফেলে কিছু মেলেনি। এর পরে ফের গণেশকে জেরা শুরু করতেই সে পুরো ঘটনা কবুল করে।

পুলিশের দাবি, জেরায় গণেশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন সে ও তার এক সঙ্গী রতন সিংহ ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এসেছিল। ভূপেন্দ্রবাবুকে কিছুক্ষণ অনুসরণ করার পরে তাঁর ঘাড়ে পাউডারটি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। তাতে চুলকানি শুরু হলে উপযাচক হয়ে গণেশ ওই প্রৌঢ়ের গায়ে জল ঢেলে দিয়ে জামা খুলতে সাহায্য করে। সেই অন্যমনস্কতার সুযোগে ব্যাগ থেকে টাকা ও কাগজ হাতিয়ে চম্পট দেয় রতন।

তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পেরেছেন, রতন টাকাটা হালিশহরে গণেশের স্ত্রীকে দিয়েছিল। গণেশের থেকে হালিশহরের ঠিকানা জেনে সেখানে হানা দেয় বালি থানার পুলিশ। গণেশের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১৫ হাজার টাকা ও রেলের কাগজপত্র। গণেশের স্ত্রী স্বীকার করেছেন, তিনি এক হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছেন। রতনের বাড়িতে তার হদিস মেলেনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কেপমার-দলের মূল পাণ্ডা হালিশহরের বাসিন্দা প্রকাশ সিংহ নামে এক ব্যক্তি। তার হয়েই গণেশ ও রতন কাজ করে।

আগেও বহু বার বালি, বেলুড়-সহ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় কেপমারি করেছে গণেশ ও রতন। কয়েক বার গ্রেফতার হয়েছে কলকাতা পুলিশের এলাকাতেও। বালি থানা থেকে ফের কলকাতা পুলিশ গণেশকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

টাকা উদ্ধারের খবর পেয়ে ভূপেন্দ্রবাবু রবিবার বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথম থেকেই খুব সহযোগিতা করছে। সেদিনও ট্রাফিক পুলিশ দৌড়ে গিয়ে ধরল। বালি থানাও খুব চেষ্টা করেছে বলেই টাকা ফেরত পেলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Stolen money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE