বাড়িতে আহত ছাত্র স্নেহাশিস। —নিজস্ব চিত্র।
ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে চ্যালাকাঠ দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিকেলে শ্রীরামপুরের মাহেশ উচ্চ বিদ্যালয়ে ওই ঘটনায় স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় নামে প্রহৃত ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার অভিযুক্ত শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবক এবং এলাকাবাসী। সুগত মুখোপাধ্যায় নামে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন স্নেহাশিসের পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে সুগতবাবু অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি সংবাদ মাধ্যমকে কিছু এ নিয়ে বলব না।’’ কিছু তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা ওই শিক্ষকের আচরণ সমর্থন করেন না। বিদ্যালয়ের তরফে সমস্ত ঘটনা জেলার স্কুল শিক্ষা দফতর এবং শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ইংরেজির শিক্ষক সুগতবাবুর বাড়ি জিরাটে। মঙ্গলবার শেষ পিরিয়ডে স্নেহাশিসদের ক্লাস নিচ্ছিলেন তিনি। ছুটির ঘণ্টা পড়ার পরেই স্নেহাশিস তাঁর উদ্দেশে অঙ্গভঙ্গি করেছে এই অভিযোগে তার উপর চড়াও হন তিনি। অভিযোগ, একটি চ্যালাকাঠ দিয়ে স্নেহাশিসকে বেদম মারধর করেন সুগতবাবু। মারের চোটে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার কোমরের নীচে দাগ হয়ে যায়। ছাত্রদের কাছে খবর পেয়ে অন্য শিক্ষকরাও সেখানে চলে আসেন। স্কুল কর্তৃপক্ষই স্নেহাশিসকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যান। স্কুলের এক শিক্ষাকর্মী জানান, মারের চোটে দীর্ঘক্ষণ ছেলেটির পা কাঁপছিল। পরে স্নেহাশিসের বাড়ির লোকজন সুগতবাবুর বিরুদ্ধে শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। স্নেহাশিসের অবশ্য দাবি, সে ওই শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে কোনও অঙ্গভঙ্গি করেনি। এক সতীর্থ তাকে বুধবার সে স্কুলে আসবে কি না জিজ্ঞাসা করায় উত্তরে সে হাত নাড়ে। ওই শিক্ষক তখন ভাবেন, তাঁকে ‘টা টা’ বলে সে অঙ্গভঙ্গি করছে। ঘটনা জানাজানি হলে অভিভাবকদের একাংশ স্কুলে জড়ো হন। স্নেহাশিসের পাড়ার লোকজনও এসে ওই শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রধান শিক্ষকের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন অভিভাবকেরা। তাঁকে বদলিরও দাবি জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে সব জানান।
প্রধান শিক্ষক সোমনাথ দত্ত শর্মা বলেন, ‘‘অভিভাবকরা যে অভিযোগ করেছেন, তা বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতিকে দিয়েছি। পরিচালন সমিতিতে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ এ দিন মাহেশের নেহেরুনগর কলোনিতে স্নেহাশিসের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, সে বিছানায় শুয়ে আছে। কোমরের নীচে মারের চিহ্ন স্পষ্ট। মা রত্না গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্যর এমন মেরেছেন, ছেলের বসতে পর্যন্ত কষ্ট হচ্ছে। এ ভাবে কেউ মারে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy