অঙ্গীকার: কচ্ছপটি উদ্ধার করেন এই যুবকরাই। নিজস্ব চিত্র
জলাশয় থেকে কোনও ভাবে রাস্তায় উঠে এসেছিল বড়সড় একটি কচ্ছপ। মাংসের লোভে কেউ কেউ হাজির হয়েছিলেন বটি-কাটারি নিয়ে। কিন্তু বাধ সাধলেন স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা। কচ্ছপটিকে বাঁচিয়ে শুধু নদীতে ছেড়েই দিলেন না হুগলির নালিকুলের ওই যুবকরা। এ বার থেকে কচ্ছপ বাঁচানোর শপথও নিলেন।
রবিবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন নালিকুলের মৈত্রী সঙ্ঘ নামে ওই ক্লাবের জনা ছ’য়েক সদস্য। পাঁচ জন চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। এক জন ব্যবসায়ী। ওই এলাকা দিয়ে কানা নদী বয়ে গিয়েছে। চোয়ালপাড়ায় নদীর ধারেই রাস্তার উপরে কচ্ছপটি তাঁদের নজরে পড়ে। গ্রামবাসীদের একাংশ কচ্ছপটিকে কেটে খাওয়ার কথা জানালে বাধ সাধেন ক্লাবের সদস্যরা। তাঁরা হরিপাল থানায় খবর দেন। পুলিশ খবর দেয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থার সদস্য বিশাল সাঁতরাকে।
বিশাল জানান, কচ্ছপটির ছবি তুলে তিনি দেশের কচ্ছপ বিশেষজ্ঞ শৈলেন্দ্র সিংহকে পাঠান। শৈলেন্দ্রবাবু জানান, সেটি ‘ইন্ডিয়ান পিকক সফট শেল টার্টল’ প্রজাতির কচ্ছপ। এমন কচ্ছপ ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তানে দেখা যায়। উদ্ধার হওয়া কচ্ছপটির দৈর্ঘ্য ৫০.২ সেন্টিমিটার চওড়া। ওজন প্রায় ১১ কিলোগ্রাম। এই প্রজাতির কচ্ছপ ৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিশাল গ্রামবাসীদের বোঝান, কেন কচ্ছপটিকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
ক্লাবের সদস্য জয়দেব ঘোষ, সুজিৎ খোরট, ভুবন ঘোষ, সন্দীপ ঘোষ, সুনীল মাঝি, কুনাল ঘোষেরা সিদ্ধান্ত নেন, নিজেদের হাতেই তারা কচ্ছপটিকে জলাশয়ে ছাড়বেন। জয়দেববাবু বলেন, ‘‘এর আগে সাপ বাঁচিয়েছি। এখন থেকে নদীর কচ্ছপ যাতে মানুষের লোভের মুখে না পড়ে, সে দিকে আমরা নজর রাখব। বন্যপ্রাণ ধ্বংস হলে আখেরে যে মানুষেরই ক্ষতি সেটা সবাইকে বুঝতে হবে।’’ তাঁরা জানান, কচ্ছপ ধরা-মারা বা মাংস খাওয়া যে বেআইনি এবং তাতে জেল-জরিমানা হতে পারে, সে কথাও সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy