প্রতীকী ছবি।
স্থানীয় স্তরে দাবি উঠলেও গোঘাটের ভাবাদিঘিতে রেলের দিক পরিবর্তন কোনভাবেই সম্ভব নয়-বুধবার চুঁচুড়ায় জেলাশাসকের দফতরে রাজ্য প্রশাসন ও রেলের পদস্থ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে তা জানিয়ে দেওয়া হল আন্দোলনকারীদের।
বুধবারের ওই বৈঠকে এপিডিআর-সহ কয়েকটি গণসংগঠনের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন, গোঘাটে স্থানীয়দের দাবি মেনে রেলের গতিপথ পরিবর্তন করা হোক।
এর আগে সম্প্রতি রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু কলকাতায় এলে তাঁর কাছেও একই দাবি জানিয়েছিলেন এপিডিআর-সহ কয়েকটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তখনই রেলমন্ত্রী তাঁদের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলার পরামর্শ দেন। মূলত সেই সাপেক্ষেই এ দিন হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশাল এবং রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়র সুনীল যাদবের উপস্থিতিতে ওই বৈঠক হয়।
সেখানেই রেল এবং রাজ্য প্রশাসনের তরফে আবেদনকারীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও পরিস্থিতিতেই আর গোঘাটে রেলের গতিপথ পরিবর্তনের সুযোগ নেই। তাই ওই দাবি থেকেও সরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয় সরকারি প্রতিনিধিদের তরফে। প্রশাসনের বক্তব্য, নির্দিষ্ট নকশার ভিত্তিতে ওই রেলপথের কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাঝে বাধা না পড়লে ওই কাজ এতদিনে শেষ হয়ে যেত। তাই এখন আর কোনও দাবি মানার পরিস্থিতি নেই।
বিষয়টি জেনে গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, ‘‘অযথাই এতদিন আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছিল। আমরা না কি, রেলের গতিপথ পরিবর্তন করতে দিচ্ছি না। আমাদের আশা, বুধবারের রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর সেই ভুল প্রচার বন্ধ হবে।’’
হাওড়া থেকে তারকেশ্বর হয়ে বিষ্ণুপুর এই দীর্ঘ ১২৪ কিলোমিটার রেলপথের কাজ শেষ পর্যায়ে এসে গোঘাটে বাধার মুখে পড়ে। এর আগে ওই রেল পথে ট্রেন চলাচল শুরু করে দেয় পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। যেমন কাজ এগিয়েছে ওই পথ ধরে রেল চলাচলও শুরু হয়েছে। কিন্তু গোঘাটে এসে সেই কাজ থমকে যায়। প্রাথমিকভাবে কিছুটা বিচ্ছিন্নভাবে হলেও পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ভাবাদিঘি নিয়ে বেঁকে বসেন। রেল ও রাজ্য প্রসাশন এক যোগে আন্দলোনকারীদের কাছে আবেদন করেন, রেলের কাজ চলতে দেওয়া হোক। রেল লাইন বসানোর প্রয়োজনে দিঘির যে সামান্য অংশ বোজানো হবে, তার উল্টোদিকে জমি কিনে দিঘি কেটে দেওয়া হবে।
কিন্তু গ্রামবাসীরা তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, রেলপথ ঘুরিয়ে নেওয়া হোক। ওই দিঘির সঙ্গে স্থানীয়দের জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন জড়িত। রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুনীল যাদব বলেন, ‘‘রেলপথ সরানো সম্ভব নয়। সেটাই মানুষকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে সেই চেষ্টাই এখন হচ্ছে। পরিস্থিতি কাজের অনুকূলে এলেই রেল সেখানে কাজ শুরু করবে।’’ হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘রেলের তরফে এ দিন পরিস্থিতি বুঝিয়ে বলা হয়েছে বৈঠকে উপস্থিত সকলকে। এখন দেখার পরিস্থিতির উন্নতি হয় কি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy