পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রর সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মিছিল তৃণমূলের। তারকেশ্বরে। ছবি: দীপঙ্কর দে।
এক দিকে ট্রেন বিভ্রাট। তার উপরে মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘায়ের মতো সড়ক পথের দখল নিল শাসক দলের মিছিল। রাজ্যের ক্রীড়া ও পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রকে সিবিআই গ্রেফতার করার প্রতিবাদে হুগলির বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের বিক্ষোভ মিছিলে তীব্র যানজট হল। সব মিলিয়ে রবিবার ছুটির দিনে পথে বের হওয়া মানুষ চূড়ান্ত নাকাল হলেন।
সকালে লিলুয়ায় পূর্বা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার ফলে হাওড়া থেকে বর্ধমান এবং তারকেশ্বর শাখায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। গন্তব্যে পৌঁছতে নাজেহাল হন বহু মানুষ। অনেকেই ট্রেন থেকে নেমে ঘুরপথে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তৃণমূলের মিছিলের কারণে যানজটে আটকে যান। শ্রীরামপুরের মাহেশের বাসিন্দা কৃষ্ণকান্ত দাস স্ত্রী-শিশুকন্যা, শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন। জগন্নাথ এক্সপ্রেসে হাওড়ায় পৌঁছন প্রায় সকাল ৮টা নাগাদ। ট্রেন বিভ্রাটের কারণে সেখান থেকে লোকাল ট্রেনে শ্রীরামপুরে নামতে পঁয়ত্রিশ মিনিটের পরিবর্তে আড়াই ঘণ্টা লাগল।
পরিবহণমন্ত্রীর গ্রেফতারির প্রতিবাদে মাহেশের স্নানপিড়ি ময়দান থেকে মিছিল বেরিয়েছিল। মিছিলে হাঁটেন পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়, উপ-পুরপ্রধান উত্তম নাগ-সহ বেশ কিছু কাউন্সিলর। জিটি রোড ধরে মিছিল যায় স্টেশন সংলগ্ন গাঁধী ময়দানে। শাসক দলের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক সামিল হন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুণ্ডুপাত করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলের জেরে জিটি রোডে ব্যাপক যানজট হয়। শহরে ইএসআই হাসপাতালের কাছে একটি স্কুলে একটি সংগঠনের উদ্যোগে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা হচ্ছিল। ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় বাড়ি থেকে বেরিয়েও অনেকেই সেখানে আসতে পারেননি। রাস্তায় যানজটের কারণে কারও কারও পৌঁছতে দেরি হয়।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রর সিবিআইয়ের হাতে
গ্রেফতারের প্রতিবাদে মিছিল তৃণমূলের। শ্রীরামপুরে। ছবি: প্রকাশ পাল।
এ দিন সকালে তারকেশ্বরের চাউলপট্টি থেকে লোকনাথ স্টেশনের সামনে পর্যন্ত মিছিল হয়। স্থানীয় সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, তারকেশ্বরের পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত, উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডু মিছিলে নেতৃত্ব দেন। কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূল নেতারা। সকালেই আরামবাগের ব্লক পাড়া থেকে মিছিল হয় লিঙ্ক রোড ধরে। গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তায় যানবাহন থমকে যায়। সেই মিছিলেও ছিলেন সাংসদ অপরূপাদেবী। সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা-সহ তৃণমূলের অন্য স্থানীয় নেতারা।
বিকেলে বৈদ্যবাটি পুর-এলাকার নওগাঁ থেকে জোড়া অশত্থতলা পর্যন্ত মিছিল হয়। মিছিল শেষে প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। মিছিলে হাঁটেন স্থানীয় বিধায়ক মুজফ্ফর খান, পুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ প্রমুখ। মিছিলের কারণে জিটি রোডে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
অজয়বাবুর অবশ্য বক্তব্য, “বিজেপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলকে হেনস্থা করছে। এ রাজ্যের স্থিতি নষ্ট করতে চাইছে। এর প্রতিবাদে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিছিলে সামিল হয়েছে। তবে এতে কারও অসুবিধা হয়ে থাকলে, আমরা দুঃখিত। এ দিন বিকেলে পাণ্ডুয়ায় মিছিল হয় দলের ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলামের নেতৃত্বে, আনিসুলবাবুর কথায়, “বাংলাকে বঞ্চনার প্রতিবাদে বহু মানুষ কেন্দ্রের বিরদ্ধে এই মিছিলে সামিল হয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy