ভরা প্ল্যাটফর্মে আচমকা দুই সাধুর বচসা থেকে মারামারি। শেষে বাঁশের মুগুর দিয়ে মেরে এক সাধুকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল অন্য জনকে। শুক্রবার এই ঘটনায় সরগরম হয়ে ওঠে ব্যান্ডেল স্টেশন। যাত্রীরাই অভিযুক্তকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ জানায়, ধৃত শঙ্কর চৌধুরী ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রাত পর্যন্ত নিহতের পরিচয় পুলিশ জানাতে পারেনি।
রেল পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত নিজের অপরাধের কথা কবুল করে জানিয়েছেন, যিনি নিহত হন তিনি শঙ্করবাবুর জায়গায় বসছিলেন কয়েক দিন ধরে। তন্ত্রমন্ত্র করে হটাতে চেষ্টা করছিলেন তাঁকে। তাঁর শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। তাই মারধর করেন। একই সঙ্গে রেল পুলিশ দাবি করেছে, ধৃত কথাবার্তায় অসংলগ্নতা রয়েছে। পুরনো শত্রুতার জেরে খুন কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।
রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্টেশনের তিন ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে একটি খুঁটির দু’দিকে বেশ কিছু দিন ধরেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বসছিলেন দুই সাধু। দু’জনেরই পরণে থাকত লাল কাপড়, উড়নি। কপালে সিঁদুরের তিলক। তাঁরা জড়িবুটিও বিক্রি করতেন। এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ দু’জনের বচসা শুরু হয়। যাত্রীরা প্রথম দিকে গুরুত্ব দেননি। আচমকাই দু’জনে মারামারিতে জড়ান। যাত্রীরা থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যে ফের দু’জনের মারামারি শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, শঙ্করবাবু একটি বাঁশের মুগুর জোগাড় করে এনে অন্য সাধুকে মাথার পিছনে মারেন। আহত হয়ে ওই সাধু জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। যাত্রীরা শঙ্করবাবুকে ধরে ফেলেন। শুরু হয় মার। খবর দেওয়া সত্ত্বেও রেল পুলিশ আধ ঘণ্টা দেরিতে আসে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। রেল পুলিশ অভিযোগ মানেনি। তারা এসে শঙ্করবাবুকে গ্রেফতার করে। আহত সাধুকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানে কিছু ক্ষণের মধ্যে তিনি মারা যান। বিকেলে ঘটনাস্থলে তদন্তে যান ব্যান্ডেল রেল পুলিশের পদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থল থেকে দুই সাধুর ব্যাগ ও জিনিসপত্র উদ্ধার করেন। স্থানীয় দোকানিদের কয়েক জনের দাবি, নিহত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে স্টেশনের চা-বিক্রেতা জিতেন্দ্র কুমার বলেন, “ওঁরা রোজই এখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বসতেন। ওঁদের বাড়ি কোথায় জানি না। আজকে কী থেকে যে দু’জনের ঝামেলা লাগল, বুঝতে পারলাম না। তার পরে তো ওই কাণ্ড।” অসীম মজুমদার নামে এক যাত্রী বলেন, “যাতায়াতের পথে দুই সাধুকে দেখতাম। কিন্তু এত লোকের মধ্যে কী কারণে যে এক জন অন্য কে মেরে ফেললেন, বুঝলাম না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy