মৃত রাজিয়া সুলতানা।
এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কোথায় ময়না-তদন্ত হবে তা নিয়ে বচসা থেকে মারামারিতে জড়িয়ে পড়লেন মৃতার শ্বশুরবাড়ি ও বাপের বাড়ির লোকজন। অভিযোগ, মৃতার বাপের বাড়ির লোকেদের বেধড়ক মারধর করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বাগনান হাসপাতাল চত্বরে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। মৃতার বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে আরও ১৭ জনকে।
মৃতার বাপের বাড়ির সূত্রে খবর, গত এপ্রিল মাসে দেউলটির বাঁকুড়দহের বাসিন্দা রশিদুলের সঙ্গে মেচেদার শান্তিপুরের রাজিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পণ হিসেবে নগদ ৭০ হাজার টাকা, ৪ ভরি সোনা ও অন্যান্য আসবাসপত্রও দেওয়া হয়। তারপরেও বাপের বাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য রাজিয়ার উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালানো হত। সপ্তাহ কয়েক আগে তাঁকে বাপের বাড়ির লোকেরা নিয়ে চলে যান। সোমবার তাঁকে ফের শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যান তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে দেউলটির বাঁকুড়দহের বাসিন্দা রাজিয়া সুলতানার দেহ পুকুরে ভাসতে দেখেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাগনান হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে মেচেদা থেকে চলে আসেন রাজিয়ার বাপের বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, রাজিয়াকে খুন করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। হাসপাতালের সঙ্গে যোগসাজস করে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাল্টে দেওয়া হবে সেই আশঙ্কায় তাঁরা দাবি করেন, মেচেদার কোনও হাসপাতালে মেয়ের দেহের ময়না-তদন্ত করতে হবে। অন্যদিকে মৃতার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দাবি করেন, ময়নাতদন্ত বাগনান হাসপাতালেই করতে হবে। যদিও বাগনান হাসপাতালে ময়না-তদন্ত করা হয় না।
মৃতার বাবা শেখ রেজাউল আলি বলেন, “ময়নাতদন্ত কোথায় হবে তা নিয়ে দুই বাড়ির লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছিল। হঠাত্ই ওরা আমাদের মাটিতে ফেলে মারধর শুরু করে। বাগনানে আমাদের আত্মীয়দের খবর দেওয়া হলে তাঁরা এলে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পালানোর চেষ্টা করে।” রাজিয়ার বাপের বাড়ির লোকজন তাঁদের ধরে স্থানীয় এক ক্লাব ঘরে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়।
রেজাউলের অভিযোগ, “খুনের তথ্য লোপাট করতে ওরা আমাদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল।” তিনি এ দিন বাগনান থানায় মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকদের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মৃতার দেওর খুরশিদ মিদ্যাকে গ্রেফতার করে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy