ছবি: পিটিআই।
মৌসুমি বাতাসের আনাগোনা শুরু হওয়ার কথা আরও পক্ষ কাল পরে। সেটাই বর্ষার আগমন বার্তা। কিন্তু তার আগেই আন্দামান সাগরে (বঙ্গোপসাগরের আন্দামান অংশ) তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। অনেকে ওই ঘূর্ণাবর্তের মধ্যে বিপদের আভাস পেলেও, আপাতত সেই ঘূর্ণাবর্তই প্রাণ সঞ্চার করল দক্ষিণবঙ্গে। ফুটিফাটা মাটিতে কিছুটা রসের সঞ্চার যেমন হল, তেমনই আগামী কয়েক দিনও কালবৈশাখীর ইঙ্গিত দিয়ে গেল বোধহয়।
উত্তর ভারত থেকে পূর্ব ভারত পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছিল ঠিকই। আবহবিদদের অনেকের মতে ওই অক্ষরেখার পক্ষে একসঙ্গে এতটা জলীয়বাষ্প ঢোকানোর ক্ষমতা ছিল না। আন্দামান সাগরের নির্মীয়মান ঘূর্ণাবর্তটি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়াতেই হালে পানি পায় ওই নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি। বঙ্গোপসাগর থেকে হু হু করে জলীয়বাষ্প ঢোকাতে অনুঘটকের কাজ করেছে ওই নির্মীয়মান ঘূর্ণাবর্তটি। ঘূর্ণাবর্তটির শক্তি আরও বাড়বে কি না, ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিয়ে তা কোথায় আঘাত করবে সেই পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতর এখনও দেয়নি। তবে ওই ঘূর্ণাবর্তটি তত দিন থাকবে, যতদিন উত্তরপ্রদেশের নিম্নচাপ অক্ষরেখাটির পোয়া বারো। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ‘অস্বাভাবিক’ গরম কমানোর ওষুধ যে তার কাছে মজুত!
এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিন এবং শেষ ১৫ দিনের আবহাওয়ার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অমিল খুঁজে পেয়েছেন আবহবিদেরা। প্রথম ১৫ দিনে গাঙ্গেয় এলাকায় বাতাসে জলীয়বাষ্প ছিল প্রচুর। কিন্তু তাপমাত্রা তেমন বাড়েনি। আর শেষ ১৫ দিনে তাপমাত্রা বেড়েছে চড় চড় করে। জলীয়বাষ্পের দেখা মেলেনি। কালবৈশাখী তৈরিতে জলীয়বাষ্প ও উচ্চ তাপমাত্রা— দুটোরই একান্ত প্রয়োজন। সেই রসায়নটা করে দিল মূলত বঙ্গোপসাগরের নির্মীয়মান ঘূর্ণাবর্তটি।
আবহবিদেরা বলছেন, আন্দামান সাগরের নির্মীয়মান ঘূর্ণাবর্তটি যদি তাড়াতাড়ি স্থান পরিবর্তন না করে তার প্রভাব কিন্তু পড়বে বর্ষার উপরে। কারণ, মৌসুমি বাতাস ঢোকার রাস্তাটা আটকে থাকবে যে! আবার উত্তরপ্রদেশ থেকে পূর্বভারত পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষ রেখাটি বেশি দিন ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকলেও বিপদ। সেটা আবার আন্দামান সাগরের ঘূর্ণাবর্তের স্বাভাবিক ছন্দে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy