Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal SSC and TET Scam

‘দাদা, আমার ফোনটা খুঁজে দাও’, মোবাইল ছুড়ে ফেলেও স্থানীয় তৃণমূল নেতার কাছে আকুতি জীবনের!

জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে ফোন খুঁজতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কী কথা হয়েছে, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সাধন প্রামাণিক। শ্রমিক জোগাড় করে দিয়েছিলেন তিনিই।

A photograph of Jiban Krishna Saha

পুকুরে দু’টি মোবাইল ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়ঞা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৪৩
Share: Save:

তদন্ত ‘এড়াতে’ তল্লাশি অভিযানের সময় পুকুরে দু’টি মোবাইল ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার সেই তৃণমূল বিধায়কই নাকি পরে মোবাইল খুঁজে দেওয়ার জন্য বলেছিলেন! সোমবার বেলার দিকে দ্বিতীয় ফোনটি উদ্ধারের পর আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনটাই জানালেন তৃণমূল নেতা সাধন প্রামাণিক। দু’দিন ধরে পুকুরে যাঁরা বিধায়কের মোবাইল খুঁজেছেন, তাঁদের নিয়ে এসেছিলেন সাবলদহ অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সাধন।

দু’টি মোবাইল পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে, এ কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই শনিবার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে দিয়ে একাধিক বার বাড়ির ছাদ থেকে ও পুকুরের ধার থেকে ঢিল ছুড়িয়ে মোবাইল ফেলার জায়গা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন সিবিআই কর্তারা। এর পর পুকুর থেকে ফোন খুঁজে বার করার জন্য তাঁরা শ্রমিকের খোঁজ করলে এগিয়ে আসেন সাধন। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই অফিসাররা আমাকে ডেকেছিলেন। আমাকে বলল, ‘আপনার পঞ্চায়েতে এসেছি। আপনাকে সাহায্য করতে হবে।’ একটা কাগজ দেখিয়ে বলেছিল, এটা নাকি উপরমহলের নির্দেশ! অর্ডারের কপি আমার হাতে দেয়নি। কিন্তু নিজের চোখে দেখেছি।’’

সাধন জানান, লোকজন জোগাড় ফোন খুঁজতে গিয়ে জীবনের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। বিধায়কও নাকি ফোন খুঁজে দেওয়ার জন্য কাতর আবেদন করেছিলেন তাঁর কাছে। সাধনের কথায়, ‘‘জীবন’দার বাড়ি পৌঁছনোর পর দু’বার কথা হয়েছিল। এক বার বলেছিলেন, ‘দাদা, মোবাইলটা খুঁজে দাও।’ আর কাজ শেষের সময় এক বার বলেছিলেন, ‘দাদা, ভিতরটা ভাল করে খুঁজেছিলে তো?’’

শুক্রবার রাত থেকে দু’টি মোবাইলের খোঁজে পুকুরে তল্লাশি শুরু হয়েছিল। পুকুরের জল ছেঁচে তোলার পর রবিবার দুপুরে পাঁক থেকে জীবনের প্রথম মোবাইলটি উদ্ধার হয়। এর পর দ্বিতীয় ফোনের খোঁজে রবিবার বিকেল নাগাদ জেসিবি মেশিনটি আনায় সিবিআই। তার পিছনে পিছনে এসেছে মাটি বহনকারী একটি ট্র্যাক্টর। তার কিছু ক্ষণের মধ্যে নিয়ে আসা হয় প্লাস্টিকের পেল্লায় বস্তা। উৎসাহীরা তখনও ঠাওর করতে পারেননি আগামী কয়েক মিনিটের মধ্যে ঠিক কী ঘটতে চলেছে। জেসিবি আসা ইস্তক পুকুরের চার পাশে ভিড় জমেছিল। সবার সামনেই শুরু হয় ‘সিবিআই অপারেশন’। সেই মোবাইল শেষমেশ পাওয়া যায় সোমবার বেলার দিকে। জীবন গ্রেফতার হওয়ার পর। সাধন বলেন, ‘‘রবিবার ১০ জন শ্রমিক ছিলেন। আজ (সোমবার) ১৮ জনকে এনেছিলাম। প্রত্যেক শ্রমিককে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।’’ জীবনের গ্রেফতারি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি অন্যায় করেন, আইন অনুযায়ী তাঁর সাজা হবে। তবে অভিযোগ প্রমাণ করা জরুরি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jiban Krishna Saha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE