কল্যাণী লুমিনাস ক্লাব। —ফাইল চিত্র।
কল্যাণীর যে পুজো নিয়ে সব চেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে, সেই আইটিআই মোড়ের লুমিনাস ক্লাবের পুজো প্রতিমাই কল্যাণীর দুর্গাপুজোর বিসর্জনের কার্নিভালে অংশ নিল না!
অথচ, বৃহস্পতিবার শহরের বাকি দুটো বড় পুজো কমিটি এ নাইন স্কোয়ার পার্ক ও রথতলার পুজো কমিটি কার্নিভালে অংশ নিয়েছে। লুমিনাস ক্লাবের পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা প্রথমে বড় প্রতিমার পরিবর্তে ছোট প্রতিমা নিয়ে কার্নিভালে অংশ নেওয়া কথা বললেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে দোলাচল দেখা গিয়েছে।
লুমিনাস ক্লাব কেন বড় প্রতিমা নিয়ে কার্নিভালে অংশ নিল না? এ প্রশ্নের জবাবে ওই ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, তাঁদের পুজোর প্রতিমা ৬৫ কেজি সোনা ও হিরের অলঙ্কারে সাজানো হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ১১ কোটি টাকা। যে স্বর্ণ গহনা প্রস্তুতকারী সংস্থা ওই বিপুল পরিমাণ অলঙ্কার পরিয়েছে প্রতিমাকে, তাদের সঙ্গে ২৭ তারিখ শুক্রবার পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে ক্লাবের। ওই স্বর্ণ গহনা প্রস্তুতকারী সংস্থার পক্ষ থেকে দেবীর অলঙ্কার খুলে নিয়ে গেলে তবেই ক্লাব কর্তারা প্রতিমার বিসর্জন দিতে পারবেন।
সে ক্ষেত্রে ওই সংস্থা ২৭ অক্টোবর যখন অলঙ্কার খুলে নেবে, তার পরেই ক্লাব প্রতিমা বিসর্জন দেবে। অথচ, প্রশাসন থেকে পুজো কমিটির জন্য অনুমোদন রয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্তই।
যে গয়না প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে পুজো কমিটির চুক্তি হয়েছে, সেই সংস্থা থেকেও স্পষ্ট কোনও তারিখের কথা জানাতে পারেনি। ওই সংস্থার পক্ষ থেকে মৃণাল গোস্বামী বলেন, “আমার ঠিক মনে নেই, অনেক দিন আগেই চুক্তি হয়েছে। এটা মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট থেকে হয়েছে। তবে ২৭ তারিখ পর্যন্তই হবে। কারণ, আমরা শেষ দিনের আগে অলঙ্কার খুলি না।”
বৃহস্পতিবার শহরে বিসর্জনের কার্নিভালের জন্য লুমিনাস ক্লাবের পুজো মণ্ডপ দুপুর ১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকার কথা রয়েছে। পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, পরে দর্শনার্থীরা এলে প্রতিমা বিসর্জনের আগে পর্যন্ত মণ্ডপ খুলে দেওয়া হবে। শুক্রবার সকাল ১১টার মধ্যে বড় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার কথা রয়েছে।
বড় প্রতিমা যদি না যায়, তা হলে ছোট প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপুজোর বিসর্জনের কার্নিভালে যাওয়ার অর্থ কী, উঠছে সে প্রশ্নও। ওই পুজোর মূল কর্ণধার অরূপ মুখোপাধ্যায় ওরফে টিঙ্কু বলেন, “আমাদের কার্নিভালে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা রয়েছে। যদি প্রশাসন অনুমোদন দেয়, তা হলে আমরা ছোট প্রতিমা নিয়ে তাতে থাকব।”
আর এই প্রসঙ্গে কল্যাণী মহকুমা শাসক হীরক মণ্ডল বলেন, “এটা হয় নাকি? বুধবার আলোচনা হয়ে গিয়েছে। এটা বিসর্জনের অনুষ্ঠান। বিসর্জনের জন্য যেতে হবে।”
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই কল্যাণীতে দুর্গাপুজো বিসর্জনের কার্নিভাল ঘিরে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা গিয়েছে। কল্যাণীর স্টেডিয়াম এলাকা থেকে পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিসর্জন ঘাটে যাওয়ার রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন পুজো কমিটির শোভাযাত্রা দেখার জন্য কয়েক হাজার মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কল্যাণী পুরসভার ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার কার্নিভাল অনুষ্ঠানের প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ, রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানি রাজ, রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সভাধিপতি তারান্নুম সুলতানা মির-সহ অন্যরা। নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy