এর বাইরেও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে কেএলও-র মতাদর্শ বিস্তার নিয়ে চিন্তা বেড়েছে গোয়েন্দাদের। রাজ্য পুলিশ জানতে পেরেছে, অনলাইনে তরুণ-তরুণীদের মগজ ধোলাই করার চেষ্টা চলছে। কেএলও-প্রধান দীর্ঘ কাল দেশের বাইরে। তাই জেএমবি, আল-কায়দা বা ইসলামিক স্টেটের মতো কেএলও-র নেতারাও অনলাইনকে বেছে নিয়েছেন বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
প্রতীকী ছবি।
শিলিগুড়িতে সম্প্রতি ধৃত দু’জন সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গিকে জেরা করে এমন কিছু তথ্য মিলেছে, যা প্রশাসন ও গোয়েন্দাদের চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেএলও বা কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজ়েশন উত্তরবঙ্গে আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে কি না, বড় হয়ে উঠছে সেই প্রশ্ন ও সন্দেহ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের সংগঠনে টানতে আবার ‘মগজধোলাই’ শুরু করেছে কেএলও। মস্তিষ্ক প্রক্ষালনের সেই প্রক্রিয়া চলছে অনলাইনে। এবং একই সঙ্গে চলছে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার, তোলাবাজির মতো অপরাধ চক্রের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টাও।
পুলিশি সূত্রের খবর, শিলিগুড়িতে ধৃত দুই সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গির নাম অবিনাশ রায় ও মৃণাল বর্মণ। বিহার থেকে অস্ত্র আমদানি করে সেগুলি অসমের কেএলও ঘাঁটিতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জেরার মুখে জানিয়েছে তারা। দু’জনে এ কথাও গোয়েন্দাদের বলেছে যে, ধরা না-পড়লে আরও কয়েক বার অস্ত্র পাচারের পরিকল্পনা ছিল তাদের। পুলিশের দাবি, অস্ত্র কেনার রসদ সংগ্রহে নেমে অবিনাশ ও মৃণাল শিলিগুড়ির কয়েক জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় করেছিল। তবে তোলাবাজি করে আদায় করা টাকার পরিমাণ বেশি ছিল না। রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের সঙ্গে পশ্চিম ভারতেরও যোগসূত্র মিলেছে। সেখান থেকে উন্নত মানের আগ্নেয়াস্ত্র আমদানির ছক ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গোয়েন্দাদের জেরায় ধৃতেরা পাভেল নামে এক ব্যক্তির কথা বলেছে। তার নির্দেশেই ওরা কাজ করত বলে জানিয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, পাভেল কেএলও-প্রধান জীবন সিংহের ঘনিষ্ঠ শাগরেদ।
এর বাইরেও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে কেএলও-র মতাদর্শ বিস্তার নিয়ে চিন্তা বেড়েছে গোয়েন্দাদের। রাজ্য পুলিশ জানতে পেরেছে, অনলাইনে তরুণ-তরুণীদের মগজ ধোলাই করার চেষ্টা চলছে। কেএলও-প্রধান দীর্ঘ কাল দেশের বাইরে। তাই জেএমবি, আল-কায়দা বা ইসলামিক স্টেটের মতো কেএলও-র নেতারাও অনলাইনকে বেছে নিয়েছেন বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা জানতে পেরেছেন, মায়ানমারের জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা কেএলও-প্রধান জীবন সিংহের বক্তৃতা অনলাইনে বিভিন্ন তরুণ-তরুণীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্রদের প্রতি রাষ্ট্রের ‘নানান বঞ্চনা’র অভিযোগ। গোয়েন্দারা জানান, এ-পর্যন্ত তারা অন্তত ১০ জনকে এ ভাবে প্রভাবিত করতে পেরেছে জেরার মুখে দাবি করেছে ধৃতেরা। তবে ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও আইনি পদক্ষেপ করতে চায় না প্রশাসন। গোয়েন্দা সূত্রের বক্তব্য, সত্যিই ওই ১০ জন কেএলও-র দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন কি না, তা যাচাই করা প্রয়োজন। তেমন হলে ওই তরুণ-তরুণীদের অভাব-অভিযোগ নিয়ে আলোচনাতেও বসতে পারে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy