পাহাড়ে চলছে যানবাহন। বুধবার সুকনায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
বন্ধ উঠতে চলেছে বলে ইঙ্গিত মিলতেই পাহাড়ে ফিরতে শুরু করেছেন দার্জিলিং-কার্শিয়াং-কালিম্পংয়ের অনেক বাসিন্দা। বুধবার শিলিগুড়ির সিকিম রাষ্ট্রীয় পরিবহণ ও দার্জিলিং যাতায়াতের ছোট গাড়ির স্ট্যান্ডে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে।
টানা বন্ধ শুরু হতেই নানা কৌশলে পাহাড়বাসীদের একটি বড় অংশ শিলিগুড়ি, নকশালবাড়ি, বাগডোগরা, চম্পাসারি, ডুয়ার্সের জয়গাঁ, মালবাজার-মেটেলিতে অস্থায়ী ডেরা বেঁধেছিলেন। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকের কথা ঘোষণা করতেই আশায় বুক বেঁধে ঘরে ফেরার পথে ওঁরা।
ওঁদের কেউ ব্যবসা করেন, কেউ হোটেলের কর্মী। কেউ বা বেসরকারি সংস্থার চাকুরে। যেমন, ম্যাল চৌরাস্তার পুলিশ বুথের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তায় ছোট্ট দোকানের মালিক প্রেমবাহাদুর ছেত্রী। বন্ধ শুরুর পরে দু’সপ্তাহ পাহাড়ে ছিলেন। মিটিং-মিছিলেও গিয়েছেন। কিন্তু, যখন দেখলেন উপার্জন বন্ধ, অথচ চাঁদা দেওয়ার বিরাম নেই, তখন এক রাতে গাড়ি ধরে নেমে এলেন নকশালবাড়িতে, মেয়ের কাছে। প্রেমবাহাদুর বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথা শোনার পরেই পাহাড়ে কিছু নেতাকে ফোন করি। কথাবার্তায় বুঝতে পারি, অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশ জোরদার। তাই ফিরছি।’’
পাহাড়ের দলগুলিকে নিয়ে নবান্নে সর্বদল বৈঠক হওয়ার কথা ২৯শে। সে কথা মনে করিয়ে শিলিগুড়ির প্রধাননগরের দার্জিলিং কার স্ট্যান্ডের অফিস কর্মী দিগম্বর রাই বললেন, ‘‘বুধবার ভোরে অনেকগুলি গাড়ি নেমেছে পাহাড় থেকে। ফিরবেও সেগুলি।’’ সেখানেই বসেছিলেন সানু লামা, শর্মিলা ছেত্রী, পুষ্পা তামাঙ্গরা। বন্ধ শুরুর মাসখানেকের মাথায় পাহাড় থেকে নেমে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন চম্পাসারি ও বাগডোগরায়। ওঁদের ছেলেমেয়েরাও এখন বাগডোগরা আর শিলিগুড়ির স্কুলে ভর্তি। শর্মিলা আর পুষ্পা বললেন, ‘‘পাশের বাড়ির এক বৃদ্ধ দম্পতির হাতে ঘর ছেড়ে এসেছিলাম। গত রাতে ওই বৃদ্ধ দম্পতি জানালেন, ফেরার সময় হয়ে গিয়েছে।’’
আশা যে বাড়ছে, সে বুঝতে পারছে শিলিগুড়ি আরটিএ অফিস। বহু গাড়িচালকই বকেয়া কর মেটাতে এসেছেন গত কয়েক দিনে। তাঁরা অনেকে আবার মোর্চা সমর্থকও।
আপাতত এই আশা নিয়েই গাড়ি চলেছে পাহাড়ের দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy