ভগ্নি না শিয্যা! কার পাশে থাকবে সুব্রতর একডালিয়া এভারগ্রিন। নিজস্ব চিত্র
কলকাতার পুরভোটে চরম দোটানায় পড়েছে প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রিন।
দক্ষিণ কলকাতায় প্রায় আশি বছরের পুরনো এই ক্লাব সুব্রতর আলোয় আলোকিত ছিল দীর্ঘদিন। গত ৪ নভেম্বর, কালীপুজোর রাতে আচমকাই মারা যান সুব্রত। ক্লাব তার ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই, সারা কলকাতার সঙ্গে এই পাড়াতেও বেজে গিয়েছে পুরভোটের দামামা। আর এই নির্বাচনকে ঘিরেই বেশ বিড়ম্বনায় এভারগ্রিনের কর্মকর্তারা।
কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন সুব্রতবাবু। সেই ওয়ার্ডেই একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাব। শাসকদল তৃণমূল প্রথম প্রার্থিতালিকা প্রকাশের সময় জানিয়েছিল, প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী করবেন তাঁর ভগ্নি তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে। ২৬ নভেম্বর নাম ঘোষণা হয় তনিমার। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই প্রচারে নেমে পড়েন সুব্রতর ভগ্নি।
কিন্তু পরদিন তনিমার থেকে তৃণমূলের প্রতীক প্রত্যাহার করে নেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে ফের প্রার্থী করা হয় বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কেই। যিনি আবার সুব্রতকে নিজের রাজনৈতিক গুরু বলে মনে করেন। ২০১৫ সালের পুরভোটে সুদর্শনাকে এই ওয়ার্ডে প্রার্থী করাতে বড় ভূমিকা ছিল প্রয়াত সুব্রতর।
সুদর্শনাকে প্রার্থী করার পর, বিক্ষুব্ধ তনিমা নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। দাদা সুব্রতর ছবি আর জোড়াপাতা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। তৃণমূল তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলেও তিনি শোনেননি। ফলে বুধবার তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বেজায় বিড়ম্বনায় পড়েছে একডালিয়া এভারগ্রিন।
পুরভোটে কাকে বেছে নেবে একডালিয়ার ক্লাব? প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ওয়ার্ডের ভোটারদের মধ্যেও। ক্লাবের কর্তা বা সদস্যরাও অনেকে এ নিয়ে খুব বেশি মুখ খুলতেও চাইছেন না। আমৃত্যু সুব্রত ছিলেন ক্লাবের সভাপতি। এক ক্লাবকর্তার কথায়, সুব্রত তাঁর জীবদ্দশায় কোনও দিনও রাজনীতিকে ক্লাবের চৌহদ্দিতে প্রবেশ করতে দেননি। তাঁরা এখনও সেই পরম্পরা ধরে রাখারই পক্ষপাতি। ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ স্বপন মহাপাত্র বললেন, “আমরা সামাজিক কাজকর্ম করে থাকি। কখনও কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ক্লাব অংশ নেয়নি। সুব্রতবাবুই চাইতেন রাজনীতি থেকে দূরে থাকুক একডালিয়া এভারগ্রিন। তাঁর সেই ভাবনাকে সম্মান দিয়েই আমরা রাজনৈতিক পরিসরে প্রবেশ করব না। একডালিয়া এভারগ্রিন থাকবে নিরপেক্ষ। তবে ক্লাব কমিটির কর্তারা, ক্লাবের সদস্যরা ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে পছন্দ হলে ভোট দিতে পারেন, যে কারও হয়ে প্রচার করতে পারেন। আমরা কাউকে কোনও নির্দেশ দেব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy