১৩ বছরের এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তিন সেনা জওয়ানের বিরুদ্ধে। প্রতীকী ছবি।
চলন্ত ট্রেনে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তিন সেনা জওয়ানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালে, হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেসে। সেই ঘটনার পরে নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে হাওড়া রেল পুলিশ। আট বছর পরে, সোমবার সেই মামলার রায় ঘোষণা করল হাওড়া আদালত। এ দিন হাওড়া জেলা পকসোআদালতের বিশেষ বিচারক সৌরভ ভট্টাচার্য ধৃত পঙ্কজ কুমার ও বালকরাম যাদবকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং দু’লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দু’বছর সশ্রমকারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্য দিকে, দোষী অপর জওয়ান মঞ্জরীশ ত্রিপাঠীর ১০ বছরের সাজা এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পঙ্কজ এবং বালকরাম সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মী। মঞ্জরীশ সেনাকর্মী। গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর। সে দিন মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে হাওড়া স্টেশনে এসে সেখান থেকে লুধিয়ানায় এক বন্ধুর কাছে যাওয়ার জন্য হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেসে উঠে পড়েছিল ১৩ বছরের ওই কিশোরী। ওই বন্ধুর সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। মেয়েটি প্রথমে সাধারণ (জেনারেল) কামরার টিকিট কেটেছিল। কিন্তু সেখানে ভিড় থাকায় সে ওঠে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা থাকা সেনাবাহিনীর কামরায়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সে দিন দুপুর ১টা ৫৫ থেকে পৌনে তিনটের মধ্যে ট্রেনের কামরায় ওই নাবালিকাকে একা পেয়ে তাকে জোর করে মদ খাইয়ে গণধর্ষণ করে পঙ্কজ, বালকরাম এবং মঞ্জরীশ। কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে উঠে আসে, তাকে ছ’বার ধর্ষণ করা হয়েছিল।
ইতিমধ্যে বাড়িতে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে চাইল্ড লাইনে খবর দেন পরিবারের লোকজন। তাদের তরফ থেকে মেয়েটিকে খোঁজার চেষ্টা শুরু হয়। অবশেষে মধুপুর থেকে সেখানকার রেল পুলিশ উদ্ধার করে নির্যাতিতা নাবালিকাকে। হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় এক অভিযুক্তকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কয়েক দিনের মধ্যেই গুয়াহাটি রেজিমেন্টসেনা শিবির থেকে ধরা হয় বাকি দুই অভিযুক্তকে।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়। অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে রেখে বিচার প্রক্রিয়া চলে। এই মামলায় মোট ১৮ জনসাক্ষ্য দেন। গত শুক্রবার পকসো আইনে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। সোমবার রায় ঘোষণা করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy