Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Durga Puja 2023

উদ্‌যাপনের ঠেলায় শিকেয় পঠনপাঠন, অগ্রিম ছুটি কিছু স্কুলে

শহরের বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এত আগে পুজো শুরু হয়ে যাওয়ায় রীতিমতো বিপাকে পড়েছে পড়ুয়ারা। পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে। কোথাও আবার পুজোর ছুটি পড়ার আগেই বন্ধ করে দিতে হয়েছে স্কুল।

An image of Pandals

পায়ে পায়ে: পড়ে গিয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড। ছুটির পরে তার পাশ দিয়ে হেঁটেই বাড়ির পথে দুই স্কুলপড়ুয়া। সোমবার, কলেজ স্ট্রিটে। —নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৫৮
Share: Save:

স্কুল-কলেজে এখনও পুজোর ছুটি পড়েনি। অথচ, তার আগে মহালয়ার দিন থেকেই শহরের বেশ কিছু পুজো মণ্ডপ খুলে গিয়েছে। দর্শনার্থীদের ভিড়ও শুরু হয়েছে। শহরের বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এত আগে পুজো শুরু হয়ে যাওয়ায় রীতিমতো বিপাকে পড়েছে পড়ুয়ারা। পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে। কোথাও আবার পুজোর ছুটি পড়ার আগেই বন্ধ করে দিতে হয়েছে স্কুল। অথচ, সরকারি স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী, ছুটি পড়ার কথা পঞ্চমী থেকে। তবে বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে চতুর্থী পর্যন্ত খোলা রাখা নিয়েই সংশয়ে বেশ কিছু স্কুল।

কলেজ স্ট্রিট চত্বরে রয়েছে হিন্দু, হেয়ার, সংস্কৃত কলেজিয়েটের মতো স্কুল। একটু দূরেই বেথুন কলেজিয়েট স্কুল। পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, কলেজ স্ট্রিট এলাকার একাধিক বড় পুজোকে কেন্দ্র করে রাস্তাঘাটের যা পরিস্থিতি, তাতে তাঁরা ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ইচ্ছুক নন। হিন্দু স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক রাজা সাহা সোমবার বললেন, “আজ থেকেই যা ভিড়, মনে হচ্ছে, পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশির ভাগ মণ্ডপও খুলে গিয়েছে। বিজ্ঞাপনী হোর্ডিংয়ের জন্য ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যাচ্ছে না। রাস্তায় গাড়িও বেড়ে গিয়েছে। এত আগে পুজো শুরু করার মানে কী?’’ হেয়ার স্কুলের নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার অভিভাবক প্রসেনজিৎ বসু বললেন, “আগে ষষ্ঠী থেকে পুজো দেখা শুরু হত। এখন মহালয়া থেকেই শুরু হচ্ছে। তা হলে পুজোর ছুটিও এগিয়ে আনা হোক। স্কুলের সামনে যে ভাবে তারস্বরে মাইক বাজছে, পঠনপাঠন কি সম্ভব? যানজটে ওদের বাড়ি ফিরতেও দেরি হচ্ছে। উৎসব শুরু হয়ে যাওয়ায় বেশ কিছু রাস্তা ‘নো এন্ট্রি’ হয়ে গিয়েছে।”

যানজটের জেরে স্কুলবাসে করে বাড়ি ফিরতে পড়ুয়াদের এতটাই দেরি হচ্ছে যে, প্রাথমিক স্তরে স্কুলের সময় কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে সাউথ পয়েন্ট। স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “আমাদের স্কুলবাস প্রাথমিকের পড়ুয়াদের বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এসে আবার উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের নিয়ে যায়। যানজটের কারণে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের বাড়ি পৌঁছতে এতটাই দেরি হচ্ছে যে, উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারাও আটকে থাকছে। তাই এখন দু’দিন প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের সময় কমিয়ে দিয়েছি।”

এ দিকে, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পুজোর ছুটি দিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানালেন বাঙুরের নারায়ণ দাস মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া। তিনি বলেন, “আমাদের স্কুলের আশপাশে শ্রীভূমি থেকে শুরু করে দমদম পার্কের অনেকগুলি বড় পুজো হয়। সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে পুলিশকর্মীদের আনা হয়, তাঁদের থাকার জন্য শিবির হয়েছে আমাদের স্কুলে।” সঞ্জয় জানান, ওই স্কুলে মহালয়া থেকেই ক্যাম্প তৈরির আবেদন করেছিল ট্র্যাফিক বিভাগ। তিনি কোনও মতে তা ঠেকান। অনেক অনুরোধে সোমবার পর্যন্ত স্কুল খুলে রাখার অনুমতি পেয়েছেন। সঞ্জয় জানান, এলাকার আরও কয়েকটি স্কুলে পুলিশের শিবির হওয়ায় পুজোর ছুটি এগিয়ে আনতে হচ্ছে।

শহরের কিছু প্রধান শিক্ষকের মতে, এ বছর এমনিতেই দু’মাস গরমের ছুটি ছিল। তার পরে পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার জন্য স্কুল ছেড়ে দিতে হয়েছিল। এখন আবার পুজোর উৎসব এগিয়ে আসার জন্য অগ্রিম ছুটি। যদিও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, “স্কুলে পুজোর ছুটি এগিয়ে আনার মতো কোনও নির্দেশিকা আমরা শিক্ষা দফতর থেকে পাইনি। তাই ছুটি নির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই পড়বে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE