কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ফাইল চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক যুবকের মৃত্যুর পরে তাঁর স্বজনদের তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও সেই রাতে পুলিশকর্মীরা কোথায় ছিলেন, সোমবার দিল্লি যাওয়ার আগে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরেই শহরের হাসপাতালগুলির সুরক্ষা নিয়ে বাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। সোমবার রাতে লালবাজারে সেই বৈঠক হয়। সেখানে হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তিনি গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন এক উচ্চপদস্থ আধিকারিককে। তাঁকে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে রিপোর্ট দেবেন ডিভিশনাল ডিসি-রা।
লালবাজার সূত্রের খবর, ওই দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ডিভিশনের ডিসি, যুগ্ম কমিশনার এবং হাসপাতালগুলির পুলিশ ফাঁড়ির ওসি-রা। সেখানে প্রথমে কমিশনার সকলের কাছে হাসপাতালগুলির নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চান। কোথায় কোথায় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে, তা-ও জানতে চান তিনি। হাসপাতালগুলিকে সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে পুলিশের কোথায় কোথায় খামতি রয়েছে, সে ব্যাপারেও অন্যদের মতামত শোনেন তিনি। সূত্রের খবর, হাসপাতালে থাকা ফাঁড়ির ওসিদের বলা হয়েছে, নজরদারিতে কোথায় খামতি থাকছে, তা খুঁজে বার করতে হবে। রিপোর্ট আকারে সেই তথ্য পাঠাতে হবে ডিসি-র কাছে। তিনি তা পাঠিয়ে দেবেন বিশেষ কমিশনারকে। যার ভিত্তিতে তৈরি হবে গাইডলাইন।
এক পুলিশকর্তা জানান, বর্তমানে সরকারি হাসপাতালগুলিতে কেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, তাতে কতটা বদল আনা দরকার, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, সিসি ক্যামেরা কতগুলি আছে, তার মধ্যে ক’টা সক্রিয়, সেগুলির সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন কি না— কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সব তথ্য ডিসি-কে পাঠাবেন হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসি এবং ওসি-রা। যা রিপোর্ট আকারে পাঠানো হবে বিশেষ পুলিশ কমিশনারকে। গাইডলাইন তৈরির ক্ষেত্রে এই সমস্ত তথ্যও মাথায় রাখা হবে।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, যে কোনও হাসপাতালেরই একাধিক গেট থাকে। রাতেও সমস্ত গেট খোলা রাখা উচিত কি না, তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ডিসিদের কথা বলতে বলা হয়েছে। কম সংখ্যক গেট খোলা রাখা হলে নিরাপত্তা বেশি করে সুনিশ্চিত করা যাবে বলেই ধারণা পুলিশকর্তাদের।
প্রতিটি সরকারি হাসপাতালেই বেসরকারি রক্ষীদের মোতায়েন রাখা হয়। কিন্তু তাঁরা ঠিক মতো কাজ করেন না বা দরকারে তাঁদের পাওয়া যায় না বলেই পুলিশের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই বৈঠকে পুলিশ কমিশনার নির্দেশ দেন, বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা কোথায় কোথায় ডিউটি করছেন, তা জেনে নিয়ে তাঁদের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে হবে পুলিশকর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy